আঙুরবালা দেবী ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী ও মঞ্চাভিনেত্রী। নজরুলগীতিতেও তার সমধিক প্রসিদ্ধি ছিল।
Table of Contents
জন্ম ও পরিবার
আঙুরবালা দেবীর পিতৃদত্ত নাম ছিল প্রভাবতী দেবী। তার জন্ম কলকাতার কাশিপুরে। পিতার নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের নিবাস ছিল বর্ধমানের ইন্দাসে।
শিক্ষাজীবন
মেধাবী ছাত্রী হিসেবে স্কুলে ছাত্রিবৃত্তি পরীক্ষায় জলপানি লাভ। সঙ্গীত প্রতিভা তার সহজাত। সুকণ্ঠের অধিকারী হওয়ায় শৈশবেই সঙ্গীত সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। সাত বৎসর বয়সে পিতৃবন্ধু অমূল্য মজুমদারের কাছে গানে দীক্ষা। খেয়াল, ঠুংরি, দাদরা ও গজলে একাধিক গুণী ওস্তাদের কাছে তামিল গ্রহণ।
কিশোরী বয়সেই গ্রামোফোন কোম্পানি থেকে গানের রেকর্ড প্রকাশ। তার প্রথম গানের রেকর্ড- ‘ বাঁধ না তরীখানি আমার এ নদীকূলে’। তার সঙ্গীত জীবনের উপর উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন জিৎপ্রসাদ, রামপ্রসাদ মিত্র, ঈষাণ ঠাকুর, জমীরুদ্দিন খাঁ এবং কাজী নজরুল ইসলাম। ঈষাণ ঠাকুরের কাছে কীর্তন, জমীরুদ্দিন খাঁর কাছে গজল ও দাদরা এবং কাজী নজরুল ইসলামের কাছে নজরুল গীতি শিখেন।
অজস্র বাংলা, হিন্দি ও উর্দু গানে কণ্ঠদান করেন।আর সেই সব অনবদ্য গানের জন্য তাঁকে ‘বাংলার বুলবুল’এবং ‘কলকাত্তা কি কোয়েল’ বলে ডাকা হত। এক সময় ছায়াছবির গানেও প্রচুর সুনাম কুড়িয়েছিলেন। তার গাওয়া রেকর্ডের সংখ্যা আনুমানিক পাঁচশত। তার রবীন্দ্র সংগীতের রেকর্ডও আছে। এক সময় থিয়েটারে গান গাওয়ার সুযোগ এসেছিলো তাঁর। আঙ্গুরবালা দেবী সে কালের বেশ কিছু থিয়েটারে গান গেয়েছিলেন।
সঙ্গীতশিল্পীর পাশাপাশি তিনি ভাল অভিনেত্রী ছিলেন। বহু নাটকে এবং বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পাশাপাশি সুযোগ এসেছিল বেতারে গান গাইবার। কলকাতায় বেতার কেন্দ্রের যে দিন সম্প্রচার শুরু হয়েছিল সে দিন প্রথম শিল্পী ছিলেন আঙ্গুরবালা। দেশের বিভিন্ন রাজা মহারাজার দরবারে মেহফিলে গান শুনিয়ে তিনি দেশ জোড়া খ্যাতি ও সম্মান লাভ করেছিলেন।
মিনার্ভা থিয়েটারের সংগে জড়িত থেকে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন। তার অভিনীত একটি ছবির পরিচালক ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। সংগীত শিল্পী হিসাবে বহু রাজা-মহারাজার দ্বারা আমন্ত্রিত হয়েছেন।
সম্মাননা
১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে আঙুরবালা দেবী কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট এবং ভারত সরকারের সঙ্গীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
মৃত্যু
আঙুরবালা দেবী ৭ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে মারা যান।
আরও দেখুনঃ