আবদুর রহমান বয়াতী ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রসিদ্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পী। তিনি একাধারে অসংখ্য জনপ্রিয় লোকগানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক৷ শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৫ সালে একুশে পদক লাভ করেছেন।
Table of Contents
জন্ম
১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার সূত্রাপুর থানার দয়াগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন আবদুর রহমান বয়াতী।
সঙ্গীত জীবন
আবদুর রহমান বয়াতী ১৯৮২ সালে ‘আবদুর রহমান বয়াতি’ নামে বাউল দল গড়ে তোলেন। তিনি দোতারা, হারমোনিয়াম, খঞ্জনি ও ভায়োলিন বাজাতে পারতেন। তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, চীন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ৪২টি দেশ বাউল গান পরিবেশন করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি গান গেয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের বিশেষ গ্রেডের শিল্পী ছিলেন।
মাটি ও মানুষকে ভালোবেসে দেশ মাতৃকার গভীর মমতায় দেশের আশাহত মানুষকে উপজীব্য করেই বেশির ভাগ গান বেঁধেছেন আবদুর রহমান বয়াতি। স্বকীয় গায়কী ঢংয়ের মাধ্যমে দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও অগণিত শ্রোতাকে মুগ্ধ করেছেন গুণী ওই শিল্পী। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডব্লিউ জর্জ বুশের আমন্ত্রণে একবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত জাঁকালো এক অনুষ্ঠানেও গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছিলেন তিনি।
বিখ্যাত গান
এ পর্যন্ত তার প্রায় পাঁচশ একক গানের অ্যালবাম বের হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি মিশ্র অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে –
- ‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে’
- ‘আমি ভুলি ভুলি মনে করি প্রাণে ধৈর্য মানে না’
- ‘আমার মাটির ঘরে ইঁদুর ঢুকেছে’
- ‘মরণেরই কথা কেন স্মরণ কর না’
- ‘মা আমেনার কোলে ফুটল ফুল’
- ‘ছেড়ে দে নৌকা মাঝি যাবো মদিনা’
চলচ্চিত্রে অভিনয়
আবদুর রহমান বয়াতী ১৯৮৯ সালে হাফিজুদ্দিন পরিচালিত ‘অসতী’ নামে একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
২০১৫ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন।
মৃত্যু
১৯ আগস্ট ২০১৩ সালে রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান বয়াতী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিতা নানা রোগে ভুগছিলেন।
আরও দেখুনঃ