একটা গান লিখো আমার জন্য লিরিক্স [ Ekta Gaan Likho Amar Jonno Lyrics ] – “একটা গান লিখো আমার জন্য” গানটি গেয়ছেন “প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় [ Pratima Bandopadhyay ]”।
একটা গান লিখো আমার জন্য লিরিক্স
একটা গান লিখো আমার জন্য
একটা গান লিখো আমার জন্য,
না হয় আমি তোমার কাছে
ছিলেম অতি নগণ্য,
একটা গান লিখো আমার জন্য।।
সে গান যেন আমায় উজাড় করে নেয়
সে সুর যেন আমায় ব্যাকুল করে দেয়,
আমি যেন হই তোমার মাঝে ধন্য।
না হয় আমি তোমার কাছে
ছিলেম অতি নগণ্য,
একটা গান লিখো আমার জন্য।।
আমি ছিলেম তোমার প্রেমের
প্রথম স্বপ্ন নায়িকা,
লিখেছি তোমার মনের আখরে
অনেক ছন্দ লিপিকা।
সেদিন আজও আমার মনে পড়ে যায়
কেমন করে যেন আমায় খুঁজে পায়,
জীবন তরী যে বোঝাই সহজ পণ্য।
না হয় আমি তোমার কাছে
ছিলেম অতি নগণ্য,
একটা গান লিখো আমার জন্য
একটা গান লিখো আমার জন্য
একটা গান লিখো আমার জন্য।।
প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় [ Pratima Bandopadhyay ]ঃ
প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় (২১ ডিসেম্বর, ১৯৩৪ – ২৯ জুলাই, ২০০৪) ছিলেন এক প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী। বাংলা গানের কণ্ঠশিল্পী জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তথা বাংলা গানের স্বর্ণযুগের মধুকণ্ঠী ছিলেন তিনি।
প্রকাশকালী নিজের জ্ঞানের সবটাই উজাড় করে সঙ্গীতের পাঠ দিয়েছিলেন প্রতিমাকে। প্রকৃত পক্ষে,সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী ছিল তার ছাত্রী। ছাত্রীভাগ্যে আত্মহারা হয়ে মেয়েটিকে নিয়েও গিয়েছিলেন আপন গুরু ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। তিনিও প্রতিমাকে কিছু পাঠ দিয়েছিলেন। শৈশবে সাত-আট বছর বয়সে ছুটিতে এক বার ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে ঢাকা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে। ঢাকা বেতারে শিশুবিভাগে গান গাওয়ার প্রথম সুযোগ পান।
সুকৃতি সেনের কথা ও সুরে ‘প্রিয় খুলে রেখো বাতায়ন’,‘মালাখানি দিয়ে আমারে ভোলাতে চাও’গান দু-খানি প্রতিমার কণ্ঠে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সেনোলা কোম্পানি রেকর্ড করে এবং জনপ্রিয়তা পায়। দক্ষিণ কলকাতার ‘মিলনচক্র’ ক্লাবে প্রতিমার গান শুনে যশস্বী শিল্পী-সুরকার সুধীরলাল চক্রবর্তী চমৎকৃত হন। তিনি ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে তার ‘সুনন্দার বিয়ে’ ছায়াছবিতে প্রতিমাকে দিয়ে ‘উছল তটিনী আমি সুদূরের চাঁদ’ গানটি গাওয়ান। আর সেই সাথে নেপথ্যগায়িকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ। তারপর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে’যদুভট্ট’ছায়াছবিতে কুন্দন লাল সায়গলের গাওয়া ‘বাবুল মোরা নইহার ছুট হি যায়ে’ বিখ্যাত গানটি তিনি গেয়েছিলেন।
তবে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত পিনাকী মুখোপাধ্যায়ের “ঢুলি” চলচ্চিত্রে ( বৃন্দাবনী সারং রাগে) রাগাশ্রিত ‘নিঙাড়িয়া নীল শাড়ি শ্রীমতী চলে’ গানটি প্রতিমাকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ও অভিভূত হয়েছিলেন। পরে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে হেমন্তর সুরে ‘শাপমোচন’ছায়াছবিতে চিন্ময় লাহিড়ীর সঙ্গে ‘পটদীপ’ রাগে দ্বৈতকণ্ঠে গাইলেন ‘ ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান’। স্বকীয় গায়কির গুণে কঠিন গানেরও সূক্ষ্ম কারুকাজে অনায়াসে বিচরণ করতে থাকলেন তিনি। বলা যায় কয়েক দশক জুড়ে ‘যদুভট্ট, ‘ঢুলি’, ‘শাপমোচন’, ‘ছুটি’, ‘চৌরঙ্গী’, ‘পরিণীতা’, ‘দাদাঠাকুর’ ইত্যাদি অজস্র ছায়াছবি ভরে আছে প্রতিমার গানে।
অন্যদিকে আধুনিক গানের মধ্যেও তার গাওয়া ‘বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই’,’একটা গান লিখো আমার জন্য’ ইত্যাদি অজস্র অবিস্মরণীয় গান তার কণ্ঠে কালজয়ী আখ্যা পেয়েছে। ছায়াছবি, আধুনিক গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, ভজন, ভক্তিগীতি, কীর্তন, কাব্যগীতি, অতুলপ্রসাদের গানেও প্রতিমা সমান উজ্জ্বল ছিলেন। কলকাতার আকাশবাণীতে রম্যগীতিও গেয়েছেন।
পঞ্চাশের দশকের শুরু থেকে প্রতিমা ছিলেন এইচ.এম.ভি. শিল্পী। প্রতিমা হেমন্তর সুরে অনেক গান-তো গেয়েইছেন,আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একত্রে সবচেয়ে বেশি গান গেয়েছেন। হেমন্ত প্রতিমার গুণগ্রাহী ছিলেন। তিনি প্রতিমার সুরেলা কণ্ঠের প্রশংসা করে বলেছিলেন-
“সে বাঁশরীকণ্ঠী। তাই ‘সা’ থেকে ‘সা’তার চাইতে সুরে আর কেউ গাইতে পারে না!’’
আরও দেখুন…