কফিল আহমেদ হলেন একজন বাংলাদেশী সমসাময়িক কবি, গায়ক এবং চিত্রশিল্পী। তিনি গণসঙ্গীতের গায়ক হিসেবে প্রসিদ্ধ। এছাড়া তিনি জলরঙ এবং আক্রিলিকে চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তার দক্ষতার ছাপ রেখেছেন।
প্রারম্ভিক জীবন
কফিল আহমেদ ১৯৬২ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কফিল আহমেদ একটি প্রগতিশীল কৃষক পরিবারের বেড়ে ওঠেন। তার পিতা নাম আবদুর রহমান মারু সরকার ও মাতার নাম মালেকা আকতার। পিতা ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং প্রগতিশীল কৃষক আন্দোলনের একজন সংগঠক।
শিক্ষা জীবন
কফিল আহমেদ ১৯৮৭ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন কফিলের প্রথম কবিতার বই “জাংশন” প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে বইটি বৃন্তক পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়।
কর্মজীবন
মধ্য আশি দশকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্প, সাহিত্য, নন্দন ও কাব্যচর্চায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য একজন। পোষাক, পরিচ্ছদ, জীবনবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি, রুচি ও তৎপরতায় তিনি অর্জন করেন বিশিষ্টতা।
জাহাঙ্গীরনগরের পরিমণ্ডল থেকে কফিল আহমেদ ক্রমে ক্রমে জাতীয় স্তরের একজন কালচারাল অ্যাক্টিভিস্টে রূপান্তরিত হয়েছেন। কবিতা চর্চার পাশাপাশি মগ্ন হয়েছেন সংগীতে।
কফিল আহমেদ স্ব-উদ্যোগে সঙ্গীত শিখেন এবং তার সঙ্গীতকর্মের যাত্রা শুরু হয় উনিশ নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। ১৯৯০ সালে তিনি একটি সঙ্গীত দলের সাথে “হাজার বছরের বাংলা গান” অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানে লালনগীতি ও চর্যাগীতির গান ব্যবহার করেন। পরে তারা একই ধাঁচের গান রচনা করতে থাকেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গণমানুষের সামনে এইসব গানের সরাসরি উপস্থাপনা করতে থাকেন। ২০০২ সালে কফিলের প্রথম গানের সংকলন প্রকাশিত হয়।
তার সাহিত্যচর্চা ও লেখালেখিও মূলত ও সম্পূর্ণত লিটলম্যাগ ভিত্তিক। জড়িত ছিলেন মধ্য-আশির দশকের অন্যতম সাহিত্য কাগজ ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য’, ‘নদী’, ‘ফৃ’, ‘দামোদর’, ‘নান্দীপাঠ’ এবং ‘মান্দার’-এর সঙ্গে। বহুবছর পর, ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে ‘উড়কি’ থেকে বের হয় তার গ্রন্থ, কবিতাগদ্যকথা, ‘রোজ তাই কথা বলে আমার কবি’।
সঙ্গীতের পাশাপাশি কফিল চিত্রাঙ্কনেও দক্ষ। উনিশ আশির দশক থেকে চিত্রশিল্পী হিসেবে তার কাজ বেশ কিছু বই এবং ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। জলরঙ এবং আক্রিলিকে তার কাজকে বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।