কল কল ছল ছল [ Kolo Kolo Cholo Cholo ]
লেবেলঃ স্টুডিও গুরুকুল [ Studio Gurukul ]
প্রযোজনাঃ সঙ্গীত গুরুকুল [ Music Gurukul ]
কাভারঃ পর্ণা মিটিল্ডা কস্তা [ Parna Mitilda Costa ]
কল কল ছল ছল
লোকসঙ্গীত ঃ
লোক সঙ্গীত বাংলাদেশের সঙ্গীতের একটি অন্যতম ধারা। এটি মূলত বাংলার নিজস্ব সঙ্গীত। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনের কথা, সুখ দুঃখের কথা ফুটে ওঠে এই সঙ্গীতে। এর আবার অনেক ভাগ রয়েছে। এটি একটি দেশের বা দেশের যেকোনো অঞ্চলের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। যেমন ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, গম্ভীরা ইত্যাদি।
প্রতিকূল প্রকৃতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আদিম যুগ থেকে মানুষ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই লড়াই থেকে উদ্ভূত ছন্দ আর সুরই লােকসংগীত। তাই এই গান শ্রমজীবী মানুষের অবসর বিনােদনের গান। পল্লির সমাজজীবনে যে গান বহুযুগ ধরে মুখে মুখে রচিত হয়ে মুখে মুখেই প্রচার লাভ করে, তাই লােকগান।
পশ্চিমবঙ্গের এবং বাংলা দেশের লােকগানের যতগুলি ধারা আছে, সেগুলিকে আমরা মূলত চারটি অঞ্চলভেদে ভাগ করতে পারি। যেমন (১) পূর্বাঞ্চল বা পূর্ববঙ্গ (২) উত্তরাঞ্চল বা উত্তরবঙ্গ (৩) পশ্চিমাঞ্চল বা মালভূমি অঞ্চল (৪) দক্ষিণাঞ্চল বা দক্ষিণবঙ্গ। এদের মধ্যে পূর্ববঙ্গের মূল ধারাটি ভাটিয়ালি, তা ছাড়াও সারি, জারি, ধামাইল, বিয়ের গান, মুর্শিদি, মারফতি, পালাগান ইত্যাদি। তবে পূর্ববঙ্গের সব গানের মধ্যে মূলত ভাটিয়ালি সুরের প্রাধান্য। উত্তরবঙ্গের প্রধান ধারাটি ভাওয়াইয়া।
এ ছাড়াও এই অঞ্চলে আমরা পাই চটকা, ক্ষিরােল, দীঘলনাশা, জাগগান, মনসার গান, রাজবংশী সম্প্রদায়ের নিজস্ব কিছু আচার অনুষ্ঠানমূলক গান, পশ্চিমাঞ্চল বা মালভূমি, অঞ্চলের গানের মূলধারাটি ঝুমুর। তা ছাড়াও ভাদু, টুসু, রাঢ়ের বাউল, কুর্মিগান, হাপু গান, ছড়া গান ইত্যাদির প্রচলন আছে। আর দক্ষিণবঙ্গের ধারাগুলির মধ্যে মলধারাটি বনবিবির গান।
তা ছাড়াও রয়েছে দক্ষিণরায়ের গান, দাশুরায়ের পান, অষ্টক গান, দক্ষিণবঙ্গের ভাটিয়ালি গান ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যভাগে মুরশিদাবাদ অঞ্চলে আলকাপ, বােলান গানের চল আছে। অঞ্চলভেদে লােকগানগুলি পৃথক হলেও এগুলির মধ্যে এক সর্বজনীন আবেদন আছে। যেমন- ঝুমুর, ভাওয়াইয়া, ঘাটু পৃথক অঞ্চলের গান হলেও এদের প্রত্যেকের বিষয়বস্তু প্রেম।
ভাওয়াইয়া উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক গান। বাংলাদেশের রংপুর, পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার ও আসামের গােয়ালপাড়া ভাওয়াইয়া গানের প্রকৃত অঞ্চল। এই গানগুলিতে স্থানীয় সংস্কৃতি, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের কর্মক্ষেত্র ও পারিবারিক ঘটনাবলির পরিচয় পাওয়া যায়। রাজবংশীরা এই গানের ধারক ও বাহক। এই গানের শ্রেষ্ঠ শিল্পী আব্বাসউদ্দিন। গানের বিষয় মূলত প্রেম। নদী-নৌকা মাঝিকেন্দ্রিক ভাটিয়ালি গান মূলত পূর্ববঙ্গের গান। এ গানের বিষয়বস্তু লৌকিক ও আধ্যাত্মিক প্রেম।
এটি অলস মুহূর্তের গান, তাই এর সুর ও লয় বিলম্বিত। বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার প্রায় নেই। সারি গানও মাঝিদের গান। তারা দাঁড় টানার সময় সারিগান গায়। প্রেমের সঙ্গে যুক্ত বলে এই গানের গতি প্রবাহ বিচিত্রমুখী। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে ঝুমুর গানের চল। এটি মূলত প্রেমসংগীত। এর সুর সহজসরল। বাংলা দেশের লােকায়ত সম্প্রদায় বাউলরা তাদের গানের মাধ্যমে প্রচার করেছেন মানবতার বাণী। মানবাত্মাকে জানার মধ্যে দিয়ে পরমাত্মাকে জানা, সেই পরমে লীন হয়ে যাওয়া বা আধ্যাত্মিক প্রেমই বাউল গানের মূল উপজীব্য বিষয়। লালন সাঁই ছিলেন এ জাতীয় গানের প্রধান গীতিকার।
কল কল ছল ছল [ Kolo Kolo Cholo Cholo ] নিয়ে কভার ঃ
আরও দেখুনঃ