Site icon সঙ্গীত গুরুকুল, GOLN

কাজরী গান

কাজরী হলো উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের ভোজপুর অঞ্চলের একটি লোকগীতি ও নৃত্যরূপ, যা হিন্দুস্থানি আধা-শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্তর্গত। সাধারণত বর্ষাকালে, অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিবেশিত হয়, যখন সবুজ মাঠ ও গাছপালা নতুন করে ফেঁসে ওঠে এবং কৃষিকাজ শুরু হয়।

কাজরী শব্দটির উৎপত্তি “কাজল” বা “কজার” থেকে, যা চোখের রাঙনির নাম। এটি মূলত উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিম বিহারের বিভিন্ন অঞ্চলে গাওয়া হয়।

কাজরী সাধারণত লোকসঙ্গীতের মধ্যে পড়ে, তবে এর গঠন আধা-শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আদলে। এর সূচনা ভোজপুর অঞ্চলে হলেও, বেনারস ঘরানার গায়কীরা—যেমন রসূলান বাই, সিদ্ধেশ্বরী দেবী ও গিরিজা দেবী—এই ধারাটিকে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে উন্নীত করেছেন।

মির্জাপুরে কাজরী উৎসব আকারে উদযাপিত হয়। পাশাপাশি, এর জনপ্রিয়তা নিকটবর্তী আওধি ভাষাভাষী এলাকায়ও ব্যাপক।

কাজরীর বিষয়বস্তু সাধারণত নারীর স্বজনবিভক্তি ও বিয়োগবেদনা নিয়ে। বর্ষার আকাশছায়ার অন্ধকার ও বৃষ্টি নারীর একাকীত্ব ও বিয়োগের বেদনা তীব্র করে। গানের মাধ্যমে নারীরা তাদের এই অনুভূতি প্রকাশ করেন এবং বৃষ্টির সাথে নিজেদের প্রিয়জনের স্মৃতিতে ডুবে যান।

একটি প্রচলিত রূপকে অনুসারে, কাজরীর গানে কাগা (কাক) প্রায়ই দূর দেশে থাকা প্রিয়জনের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দূত হিসেবে বিবেচিত হয়।

Exit mobile version