কৃষ্ণা তিথি খান বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর তালিকাভুক্ত সঙ্গীত শিল্পী। দেশের অন্যতম টিভি ‘চ্যানেল আই’-এর সেরাকন্ঠী। দেশ পেরিয়ে প্রবাসের সঙ্গীত জগতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ইতিমধ্যেই পেয়েছেন একাধিক পুরষ্কার/অ্যাওয়ার্ড। তিনি অতি সম্প্রতি লাভ করলেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান আর ষ্টেট সিনেটর প্রদত্ত সম্মাননা। প্রবাসে একদিনে মূলধারার দু’জন জন প্রতিনিধির কাছ থেকে সম্মাননা পাওয়া একমাত্র শিল্পী কৃষ্ণা তিথি।তিনি একজন বাংলাদেশী বিদেশী গায়ক এবং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি রাজ্য গান গেয়েছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
কৃষ্ণা তিথি খান ১৯৮৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম তাপস কুমার খান এবং মাতার নাম নিভা রানী খান। বাবা তাপস কুমার খা’র বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন-এর সিনিয়র আর্টিস্ট। বাবার কাছে সেই ছোট বেলায় অর্থাৎ সাড়ে তিন বছর বয়সে তার গানে হাতেখড়ি। মা নিভা রানী খাঁ ছাড়াও তার পরিবারে তারা দুই বোন আর এক ভাই। তারাও তার গানের প্রেরণার অংশ। জানান, বড় বোনের গান শেখা আর গাওয়া দেখে সে নিজেও গান গাইতে শুরু করেন। পরবর্তীতে গান শিখেছেন বাংলাদেশের সনামধন্য ‘নজরুল একাডেমী’ আর ‘ছায়ানট’ থেকে। তবে তার গানের শিক্ষা গুরু হলেন ওস্তাদ জাকির হোসেন খাঁ।
পুরষ্কার আর সম্মান
কৃষ্ণা তিথি খান স্কুল জীবন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে অর্জন করেছেন একাধিক পুরষ্কার আর সম্মান। গান গেয়ে অধিকার করেছেন শীর্ষ স্থান। বিটিভি’র নতুন কুড়ি অনুষ্ঠানেও রেখেছেন সাফল্য।
বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষাজীবনের সময় গান গেয়ে সম্মানিত হন ‘বাংলাদেশ চিল্ড্রেন একাডেমী মিউজিক্যাল কম্পিটিশন’, ‘ন্যাশনাল প্রাইমারী এডুকেশন এন্ড কালচারাল উইক কম্পিটিশন’, বাংলাদেশ ব্যাংক আইডিয়াল হাই স্কুলের ‘অ্যানুয়াল স্পোর্টস এন্ড কালচারাল কম্পিটিশন’, ‘ন্যাশনাল চিল্ড্রেন একাডেমী কম্পিটিশন’, ‘উমেশ কালচারাল সোসাইটি’, ‘ঢাকা ইন্টার সিটি এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল উইক কম্পিটিশন’,‘ইস্পাহানী গার্লস হাই স্কুল মিউজিক্যাল কম্পিটিশন’, ‘ঢাকা ইন্টার সিটি কালচারাল ফোরাম’,‘ন্যাশনাল নতুন কুঁড়ি’, ‘ভিকারুননেসা নুন কলেজ’ প্রভৃতি প্রাতষ্ঠান থেকে।
২০০৮ সালে অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ‘আন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সাংষ্কৃতিক প্রতিযোগিতা’য়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে দেশের অন্যতম টিভি ‘চ্যালেন আই’-এর সেরাকন্ঠ-২০০৯ এর সেরা চার জনের একজন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিথি। এরপর ২০১০ সালে অর্জন করেন চ্যানেল আই-এর আরো একটি অ্যাওয়ার্ড। একই বছর ফাহিম মিউজিক-এর ব্যানারে প্রকাশিত হয় তার প্রথম সলো অ্যালবাম ‘মিক্স সালাদ’।
২০১২ সালে লাভ করে ন্যাশনাল শিল্পকলা একাডেমী পুরষ্কার আর ন্যাশাল ফিল্ম এন্ড কালচারাল অ্যাওয়ার্ড। একই বছর কাতারে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল-এ যোগ দিয়ে তার গানে পরিধি ছড়িয়ে দেন। ২০১৩ সালে গান পরিবেশন করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন মেরিল-প্রথম আলো স্টার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে।
পরবর্তীতে প্রবাস জীবনে ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ফোবানা সসেম্মলন সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে সুনাম অর্জন এবং ফোবানা, এনআরবি, ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ইন ফ্লোরিডা, জেমিনি প্রভৃতি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডাবল মাস্টার্স ডিগ্রীধারী কৃষ্ণা তিথি খান বাংলা গান দিয়ে প্রবাসের বাংলাদেশীদের উজ্জ্বীবিত করছেন। কৃষ্ণা তিথি খান প্রতি বছর তার নিজস্ব অ্যালবাম প্রকাশ করতে চান। আরো চান প্রবাসের বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি তথা বাংলা গানকে আরো সমৃদ্ধ করতে।
আরও দেখুনঃ