বেগম ডালিয়া নওশিন একজন বাংলাদেশি নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা। সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে।
জীবনী
ডালিয়া পাঁচ বছর বয়সে সুধীন দাশের কাছে উত্তর ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নজরুল সঙ্গীতে দীক্ষা নেন। তার পিতা মাজহারুল ইসলাম ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথিতযশা স্থপতি যার কাছ থেকে তিনি সঙ্গীতের অনুপ্রেরণা লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে ছায়ানট থেকে সঙ্গীতের উপর পাঁচ বছর মেয়াদী শিক্ষা গ্রহণ করেন। এখানে তার শিক্ষক হিসেবে ছিলেন সোহরাব হোসেন, শেখ লুতফর রহমান ও ওস্তাদ ফুল মুহাম্মদ। শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি একই প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
ডালিয়া তার জীবনীর বিভিন্ন সময় কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অরকুট কন্নাবিরণ, বারীণ মজুমদার, জসরাজ, সগির উদ্দিন খান ও মাসকুর আলী খানের শিক্ষার্থী ছিলেন।ক্রমেই তিনি নজরুল সঙ্গীতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি ‘বিশেষ গ্রেডের’ শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভূক্ত এবং দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সময় মঞ্চ অনুষ্ঠানেও সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।
১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অবদান
ডালিয়া নওশিন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৪ বছরের কিশোরী ছিলেন। এপ্রিল মাসে পরিবারের সাথে তিনি কলকাতাতে চলে যান এবং সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে গঠিত ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’য় যোগদান করে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। তাদের দল প্রথমে ‘রূপান্তরের গান’ নামক গীতিনাট্যে গাইলেও পরে এই গীতিনাট্যের নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তির গান’ নাম দেওয়া হয়। নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে সঙ্গীত পরিবেশন করার পর তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগদান করেন।
সম্মাননা
তিনি ভারতের বর্ধমানে অবস্থিত অন্তর সংগীত মহাবিদ্যালয় এবং চন্ডীগরের প্রাচীন কলা কেন্দ্র থেকে উত্তর ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নজরুল সঙ্গীতে ‘সঙ্গীত বিশারদ’ উপাধি লাভ করেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
আরও দেখুনঃ