Site icon সঙ্গীত গুরুকুল, GOLN

নচিকেতা চক্রবর্তী । বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সংগীতকার

নচিকেতা চক্রবর্তী । বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সংগীতকার

নচিকেতা চক্রবর্তী হলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সংগীতকার। তিনি আধুনিক বাংলা গানের জীবনমুখী ধারার এক অগ্রগণ্য শিল্পী। ১৯৯০-এর দশকের প্রথম ভাগে এই বেশ ভাল আছি অ্যালবাম প্রকাশের পর তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নচিকেতার গানের মধ্যে বাস্তবতা খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠে তাই সচেতন শ্রোতা মহলে অনেক জনপ্রিয়।

প্রাথমিক জীবন

নচিকেতা চক্রবর্তীর জন্ম ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪, কলকাতায়। তার পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালের ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার চেচরীরামপুর গ্রামে , পড়াশোনা করেছেন উত্তর কলকাতার মণীন্দ্র কলেজে। ছোটবেলা থেকেই গান লেখা শুরু, সেই সঙ্গে নিজের মতো করে গান চর্চা।

নচিকেতা চক্রবর্তী প্রথম অ্যালবাম ‘এই বেশ ভালো আছি’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে এবং প্রকাশ পাওয়া মাত্র অভাবনীয় সাড়া পড়ে যায়। নচিকেতা চক্রবর্তী মুহুর্তে হয়ে যান নচিকেতা। এরপর শুধু সাফল্যের ইতিহাস। পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কখনও। তার সবচেয়ে প্রিয় গান (নীজের লেখা গানের মধ্যে) ‘নীলাঞ্জনা ৩য় খন্ড’। এ পর্যন্ত তিনি তিনশতরও বেশি গান রচনা করেছেন এবং সুর দিয়েছেন। লেখা-লেখির ক্ষেত্রে জ্যাক লন্ডন এর লেখা পড়ে তিনি প্রথম অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

এ ছাড়া মহাভারতের কৃষ্ণ চরিত্র তাকে প্রভাবিত করে। গল্প লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি ও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ‘লেখক’ নচিকেতার গল্পের বৈশিষ্ট্য, তিনি গল্পে পারতপক্ষে নারী চরিত্র রাখতে চান না। (১৯৯২) সালে তার প্রথম অ্যালবাম “এই বেশ ভালো আছি” মুক্তি পায়; এটি একটি তাৎক্ষণিক হিট অ্যালবাম ছিল।

প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি সব বয়সের শ্রোতাকে স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। চলিত ভাষার ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নব্বইয়ের দশকের দিকে বাংলা সঙ্গীতের নিশ্চল অবস্থায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। কবীর সুমন (সুমন চট্টোপাধ্যায়) এবং নচিকেতা বাংলা গানের এর প্রাচীন ধারণাকে পরিবর্তন করেছেন।

কর্মজীবন

‘নচিকেতা চক্রবর্তী’ একটি আদর্শের নাম। যে আদর্শ সততা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বিপ্লবের সমন্বয়ে গড়া। সংগীত জীবনে নচিকেতার রয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। জীবনমুখী বাংলা গানে তিনি বিশ্বসেরা। এছাড়াও তিনি হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায়ও বেশ কয়েকটি গান গেয়েছেন।

একক অ্যালবাম ছাড়াও তিনি যৌথ অ্যালবাম এবং সিনেমার গান গেয়ে থাকেন এবং বেশ খ্যাতিও অর্জন করেছেন। যেমনঃ “হঠাৎ বৃষ্টি” (১৯৯৮) ছবিটিতে তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে এবং সংগীত শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। আর এই ছবির প্রতিটি গানই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল এমনকি আজও আছে। তিনি বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনেতা হিসেবেও কাজ করেছেন। যেমনঃ কাটাকুটি, খেলাঘর, এই বেশ ভালো আছি, কে যায় ও কোয়াশা যখন ইত্যাদি।

সংগীত জীবন

নব্বই দশকের গোড়ার দিকের কথা- ঐ দিন তিনি দীর্ঘদিনের না ছাঁটা চুল, মুখ ভর্তি দাড়ি, ধনুকের ছিলার মত ছিপছিপে গড়ন আর আশ্চর্য তীক্ষ্ণ কিন্তু মায়াময় একজোড়া চোখ। পরনে ঢিলেঢালা শার্ট আর স্কিন টাইট জিন্স আর বেপরোয়া চালচলন যুবকটির।

বুকের মাঝে তাজা বারুদ নিয়ে সে গাইছে ‘এই বেশ ভাল আছি’! পুরো দেশ যেন কেঁপে উঠলো এটমিক বোমার তান্ডবে ! তার মুখনি:সৃত প্রত্যেকটি শব্দ যেন একেকটি মিসাইল হয়ে উঠলো অন্যায় অবিচার ও শাসনের নামে শোষণের বিরুদ্ধে। খেঁটে খাওয়া, বঞ্চিত জনতা তাদের মেরুদন্ডে পেল শক্তি ! বেকার যুবকের হতাশা তার গানে পেল নতুন ভাষা, সভ্যতার ফাঁপা বেলুন ফাটিয়ে ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো সে। সৃষ্টি হল নতুন একটি যুগের।

‘নচিকেতা চক্রবর্তী’ একটি আদর্শের নাম। যে আদর্শ সততা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বিপ্লবের সমন্বয়ে গড়া। সংগীত জীবনে নচিকেতার রয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। জীবনমুখী বাংলা গানে তিনি বিশ্বসেরা। এছাড়াও তিনি হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায়ও বেশ কয়েকটি গান গেয়েছেন।

একক অ্যালবাম ছাড়াও তিনি যৌথ অ্যালবাম এবং সিনেমার গান গেয়ে থাকেন এবং বেশ খ্যাতিও অর্জন করেছেন। যেমনঃ “হঠাৎ বৃষ্টি” (১৯৯৮) ছবিটিতে তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে এবং সংগীত শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। আর এই ছবির প্রতিটি গানই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল এমনকি আজও আছে। তিনি বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনেতা হিসেবেও কাজ করেছেন। যেমনঃ কাটাকুটি, খেলাঘর, এই বেশ ভালো আছি, কে যায় ও কোয়াশা যখন ইত্যাদি।

পুরস্কার

নচিকেতা বঙ্গভূষণ, সঙ্গীতভূষণ ইত্যাদি সরকারি-বেসরকারি অনেক সম্মান পেয়েছেন।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version