রাগ আড়ানা হিন্দুস্তানী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাগ, যা আশাবরী ঠাটের অন্তর্গত এবং কানাড়া অঙ্গের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এর স্বরচর্যা, চলন এবং রসায়ন রাগটিকে একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি প্রদান করে।
Table of Contents
🎼 রাগ আড়ানার স্বরবিন্যাস
উপাদান | বর্ণনা |
---|---|
ঠাট | আশাবরী |
জাতি | ষাড়ব-সম্পূর্ণ (আরোহণে ৬ স্বর, অবরোহণে ৭ স্বর) |
আরোহণ | স র ম প দ ন স্ |
অবরোহণ | স্ ন স্ দ ণ প ম প গ ম র স |
বাদী স্বর | প (পঞ্চম) |
সমবাদী স্বর | স (ষড়জ) |
অঙ্গ | পূর্বাঙ্গ |
সময় | রাত্রি তৃতীয় প্রহর (প্রায় ৯টা থেকে ১২টা) |
পকড় | স্ দ, ন স্, দ, ণ, প ম প, গ ম র স |
🎶 রাগ আড়ানার বৈশিষ্ট্য
স্বর ব্যবহার: আরোহণে শুদ্ধ নিষাদ (ন) এবং অবরোহণে কোমল নিষাদ (ণ) ব্যবহৃত হয়। গান্ধার (গ) আরোহণে বর্জিত, তবে অবরোহণে ব্যবহৃত হয়। ধৈবত (ধ) সাধারণত অবরোহণে বর্জিত হলেও, কখনও বক্রভাবে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
চলন: রাগটির চলন মধ্য ও তার সপ্তকে বেশি দেখা যায়। এর প্রকৃতি চঞ্চল, যা কানাড়া অঙ্গের রাগের বৈশিষ্ট্য।
স্বরসংযোজন: রাগ আড়ানার স্বরসংযোজন বাহার রাগের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে, তবে এর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একে স্বতন্ত্র করে তোলে।
🎤 শ্রবণ নমুনা
রাগ আড়ানার শ্রেষ্ঠ পরিবেশনা পাওয়া যায় নিম্নলিখিত শিল্পীদের কাছ থেকে:
উস্তাদ আমির খান: তাঁর গভীরতা ও মাধুর্যপূর্ণ পরিবেশনা রাগটির সৌন্দর্য তুলে ধরে।
উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খান: তাঁর গায়কিতে রাগটির চঞ্চলতা ও প্রাণবন্ততা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।
পণ্ডিত ভীমসেন যোশী: তাঁর শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত পরিবেশনা রাগটির বৈশিষ্ট্যকে উজ্জ্বল করে তোলে।
📚 তথ্যসূত্র
উচ্চাঙ্গ ক্রিয়াত্মক সঙ্গীত – শক্তিপদ ভট্টাচার্য, নাথ ব্রাদার্স, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭।
মগন-গীত ও তানমঞ্জরী, প্রথম খণ্ড – চিন্ময় লাহিড়ী, ১৪ এপ্রিল, ১৯৮৫।
রাগ বিন্যাস (প্রথম কলি) – শ্রীশচীন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য, এস, চন্দ্র এন্ড কোং, শারদীয়া সপ্তমী, সেপ্টেম্বর ১৯৭৬।
রাগ-রূপায়ণ – সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী, জেনারেল প্রিন্টার্স য়্যান্ড পাব্লিশাসার্স প্রাইভেট লিমিটেড।
সঙ্গীত পরিচিত (উত্তর ভাগ) – শ্রীনীলরতন বন্দ্যোপাধ্যায়, হসন্তিকা, ৪ঠা এপ্রিল, ১৯৭৯।
সঙ্গীত শাস্ত্র, তৃতীয় খণ্ড – শ্রীইন্দু ভূষণ রায়।
हिन्दुस्थानी सङ्गीत पद्धति क्रमिक पुस्तक मालिका दुसरी पुस्तक – হিন্দুস্থানী পণ্ডিত বিষ্ণুনারায়ণ ভাতখণ্ডে, এপ্রিল ১৯৫৪।

রাগ আড়ানা তার স্বরচর্যা, চলন এবং রসায়নের মাধ্যমে হিন্দুস্তানী সঙ্গীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর চঞ্চলতা ও মাধুর্য শ্রোতাদের মন জয় করে এবং সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে এটি একটি প্রিয় রাগ হিসেবে বিবেচিত।
আরও দেখুনঃ