রাগ কৌশিক (বা কৌশী বা কোঁশী) উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি অপ্রচলিত কিন্তু ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন রাগ। এটি প্রাচীন সঙ্গীতসারগ্রন্থে উল্লিখিত আদি ২০টি রাগের অন্তর্ভুক্ত। এই রাগটি মূলত রাগ মালকোষ-এর কাছাকাছি হলেও, এতে পঞ্চম স্বর ব্যবহৃত হওয়ায় তা মালকোষ থেকে পৃথক রূপ ধারণ করেছে। বিশেষ করে পঞ্চমের উপস্থিতিতে রাগটি ধানশ্রী রাগেরও কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।
রাগের শ্রেণি ও সংগঠন:
- ঠাট: আশাবরী (কোনো কোনো মতে কাফি)
- জাতি: ষাড়ব-সম্পূর্ণ (উত্তরাঙ্গে ষড়ব, অবরোহণে সম্পূর্ণ)
- বাদী স্বর: মধ্যম
- সমবাদী স্বর: ষড়জ
- অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ প্রধান
- সময়: মধ্যরাত্রি
- পকড়: জ্ঞ ম দ ম, প, জ্ঞ ম র স
স্বরবিন্যাস:
- আরোহণ: ণ্ স, জ্ঞ, ম, ম, দ, ণ, র্স
- অবরোহণ: র্স ণ দ ম, প, প ম, জ্ঞ র স
উপজাত রাগ: কৌশিক কানাড়া
এই রাগ থেকে কানাড়া অঙ্গের সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে একটি উপ-রাগ, যার নাম কৌশিক কানাড়া। এটি মূলত কৌশিক রাগের একটি পরিবর্ধিত রূপ, যেখানে কানাড়া রাগের বৈশিষ্ট্য মিশে গেছে।
বাংলা গানে রাগ কৌশিক:
এই রাগ বাংলা গানে প্রায় অনুল্লেখযোগ্য হলেও, কাজী নজরুল ইসলাম এই রাগে একটি অসাধারণ গান রচনা করেছেন —
‘শ্মশানে জাগিছে শ্যামা’।
- গানটির স্বরলিপি রচনা করেছেন: জগৎ ঘটক
- প্রকাশিত পত্রিকা: ভারতবর্ষ, শ্রাবণ ১৩৪৫ সংখ্যা
- পৃষ্ঠা নম্বর: ২০৩–২০৪
এই পত্রিকায় প্রকাশিত স্বরলিপির শেষে, স্বরলিপিকার রাগ কৌশিক সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দিয়েছেন, যা ঐতিহাসিক তথ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্র:
- শক্তিপদ ভট্টাচার্য। উচ্চাঙ্গ ক্রিয়াত্মক সঙ্গীত। নাথ ব্রাদার্স। প্রকাশনা: ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭।