রাগ মঙ্গলবতী দক্ষিণ ভারতীয় কর্ণাটক সংগীত পদ্ধতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাগ, যা মূলত ধর্মবতী ঠাট (বা Melakarta rāga Vachaspati)-এর অন্তর্গত। এই রাগের ভাবগম্ভীরতা, উজ্জ্বলতা ও স্বরচালনার ভারসাম্য একে একটি অভিজাত রাগরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি মূলত রাত্রি দ্বিতীয় প্রহরে পরিবেশনের জন্য উপযুক্ত, যখন শ্রোতা এক ধ্যানী ও সংবেদনশীল অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারেন।
রাগ মঙ্গলবতী
রাগ মঙ্গলবতীর মৌলিক বৈশিষ্ট্য
ঠাট (Melakarta): বাচস্পতি (ধর্মবতী)
জাতি: ষাড়ব (নিষাদ বর্জিত)
আরোহণ: স র গ হ্ম প ধ স
অবরোহণ: স ধ প হ্ম গ র স
বাদী স্বর: ঋষভ
সমবাদী স্বর: পঞ্চম
অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ প্রধান
সময়: রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর (রাত ৯টা – ১২টা)
পকড়: র গ হ্ম প, গ র, স ধ স
বি.দ্র.: এখানে “জ্ঞ” সম্ভবত “গ” (গান্ধার) নির্দেশ করে এবং “হ্ম” নির্দেশ করে “মা” বা “মধ্যম”। টাইপিং সমস্যার কারণে এটি বিভ্রান্তিকর ছিল। উপরের রূপে প্রমিত স্বর ব্যবহার করা হয়েছে।

রাগ মঙ্গলবতীর রস ও পরিবেশনা
রাগ মঙ্গলবতী তার স্বরচর্যার মাধ্যমে এক অনন্য গাম্ভীর্য ও কোমলতা প্রকাশ করে। এটি প্রায়শই করুণ, আদর্শবাদী কিংবা অনুধ্যানমূলক রচনার জন্য ব্যবহার করা হয়। ঋষভ ও পঞ্চম স্বরের মধ্যে সৃষ্ট সংলাপ শ্রোতাকে এক ধ্যানমগ্ন আবেশে টেনে নিয়ে যায়। কর্ণাটক সংগীতে এই রাগে রচিত বহু জনপ্রিয় কীর্তন ও কৃতী পরিবেশিত হয়েছে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য
- নিষাদ বর্জিত রাগ, ফলে এর ষাড়ব চরিত্র একে তুলনামূলকভাবে খোলা ও প্রসারিত অনুভব দেয়।
- মধ্যম (হ্ম) ও ধৈবত-এর ব্যবহার এই রাগের মাধুর্য ও ওজ বাড়িয়ে দেয়।
- এটি মূলত পূর্বাঙ্গপ্রধান, অর্থাৎ নিম্ন ও মধ্য সাপেক্ষ স্বরাভিযানের মধ্যে আবেগ প্রকাশ বেশি ঘটে।
তথ্যসূত্র:
- মগনগীত ও তান মঞ্জরী, তৃতীয় খণ্ড, চিন্ময় লাহিড়ী। ১৯ আগস্ট, ১৯৮৪।
আরও দেখুনঃ