শত জনমের স্বপ্ন [ Shoto Jonomer Shopno ]
শত জনমের স্বপ্ন [ Shoto Jonomer Shopno ]
গীতিকারঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল
সুরকারঃ আলাউদ্দিন আলী
প্রথম রেকর্ডের কন্ঠশিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমিন
শত জনমের স্বপ্ন [ Shoto Jonomer Shopno ]
শত জনমের স্বপ্ন
তুমি আমার জীবনে এলে
কত সাধনায় এমন ভাগ্য মেলে ।।
এই মধু মিলনে
মালা আর চন্দনে
হৃদয়ের সবটুকু সুবাশ দিয়েছি ঢেলে
কত সাধনায় এমন ভাগ্য মেলে ।।
জীবনে ও মরণে
মমতার বন্ধনে
চিরদিন কাছে রবে
আমায় যাবে না ফেলে
কত সাধনায় এমন ভাগ্য মেলে ।।
আবু হেনা মোস্তফা কামালঃ
আবু হেনা মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের একজন বরেণ্য শিক্ষাবিদ, কবি এবং লেখক।তিনি বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ছিলেন। ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদকে ভুষিত হয়েছিলেন । তিনি পাবনা জেলা বর্তমানে সিরাজগঞ্জ নাগরৌহা গ্রামে ১৯৩৬ সালের ১৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন।
আবু হেনা মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই আবু হেনা ছিলেন সংস্কৃতিপ্রেমী। নিয়মিত লিখতেন কবিতা আর গান। স্বদেশপ্রেম, মানবপ্রেম, হৃদয়ের অন্তরঙ্গ অনুভূতি, গভীর আবেগ সব মিলিয়ে আধুনিক শিল্প চর্চার এক পরিশিলিত রূপের দেখা মেলে তার কবিতা আর গানে।
তিনি ১৯৮৯ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
আলাউদ্দিন আলীঃ
তিনি নজরুলসঙ্গীত শিল্পী সালমা সুলতানাকে বিয়ে করেন। তাদের মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন একজন সঙ্গীতশিল্পী। আলাউদ্দিন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। প্রথমে ২০১৫ সালের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেওয়া হয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ আগস্ট ২০২০ শনিবার তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন ৯ আগস্ট রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আলাউদ্দিন ১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি ৯ আগস্ট ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন ।
সাবিনা ইয়াসমিনঃ
সাবিনা ইয়াসমিন একজন বাংলাদেশি নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। তার সব সখীরে পার করিতে গানটি খুবই জনপ্রিয় ।
সাবিনা মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমজাদ হোসেন ও নুরুল হক বাচ্চু পরিচালিত আগুন নিয়ে খেলা (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে আলতাফ মাহমুদের সুরে “মধুর জোছনা দীপালি” গান গাওয়ার মাধ্যমে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই গানের জন্য তিনি ৫০০ টাকা সম্মানী পান। এর পূর্বে তিনি এহতেশামের নতুন সুর (১৯৬২) চলচ্চিত্রে রবীন ঘোষের সুরে প্রথম শিশু শিল্পী হিসেবে গান করেন।
সাবিনা ১৯৭২ সালে অবুঝ মন চলচ্চিত্রের “শুধু গান গেয়ে পরিচয়” গান দিয়ে প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। একই বছর অশ্রু দিয়ে লেখা চলচ্চিত্রের “অশ্রু দিয়ে লেখা” গানটি শ্রোতাপ্রিয় হয়। পরের বছর রংবাজ (১৯৭৩) চলচ্চিত্রে তিনি কবরীর উপর চিত্রায়িত দুটি জনপ্রিয় গান “সে যে কেন এলো না” ও “হই হই হই রঙ্গিলা”-এ কণ্ঠ দেন।
তিনি ভারতীয় বাঙালি সুরকার আর. ডি. বর্মণের সুরে ইন্দো-বাংলা যৌথ প্রযোজনার অন্যায় অবিচার চলচ্চিত্রে “ছেড়ো না ছেড়ো না হাত” গানে কণ্ঠ দেন। এছাড়া তিনি বর্মণের সুরে শত্রু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন । কিশোর কুমারের ও মান্না দের সাথেও দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮৫ সালে গানের জন্য ভারত থেকে ‘ডক্টরেট” ও লাভ করেছেন।
আরও দেখুনঃ