“আমি অকৃতী অধম” একটি গভীরভাবে আবেগময় ও আত্মসমর্পণমূলক বাংলা গান, যা রচনা করেছেন বিশিষ্ট কবি ও সংগীতস্রষ্টা রজনীকান্ত সেন। এই গানটি ঈশ্বরের প্রতি একজন সাধারণ মানুষের বিনয়ী আত্মপ্রকাশ, যেখানে সে নিজের অযোগ্যতা ও সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে ঈশ্বরের অশেষ করুণা ও ভালোবাসার প্রশংসা করে।
এই গানটি বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাঁর মৃদু ও হৃদয়স্পর্শী কণ্ঠস্বর গানটির ভাবগম্ভীরতা ও আত্মিক গভীরতাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিবেশনা এই গানটিকে বাংলা ভক্তিগীতির ধারায় একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
গানটির মূল বার্তা হলো, একজন মানুষ তার সীমাবদ্ধতা ও অপর্যাপ্ততা সত্ত্বেও ঈশ্বরের অশেষ দয়া ও করুণার দ্বারা সমৃদ্ধ হয়। এই গানটি শ্রোতাদের আত্মসমালোচনা, বিনয় ও ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাসের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
“আমি অকৃতী অধম” গানটি বাংলা সংগীতের ইতিহাসে একটি অমূল্য রত্ন, যা আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে এবং ভক্তিমূলক গানের ধারায় একটি স্থায়ী স্থান অধিকার করে আছে।
আমি অকৃতী অধম [ Ami Akriti Adham ]
আমি অকৃতী অধম ব’লেও তো কিছু
কম করে মোরে দাওনি;
যা দিয়েছ, তারি অযোগ্য ভাবিয়া
কেড়েও তা কিছু নাওনি।।
তব আশীষ কুসুম ধরি নাই শিরে,
পায়ে দলে গেছি, চাহি নাই ফিরে;
তবু দয়া করে কেবলি দিয়েছ,
প্রতিদান কিছু চাওনি।।
আমি ছুটিয়া বেড়াই, জানিনা কি আশে,
সুধা পান করে মরি গো পিয়াসে;
তবু যাহা চাই সকলি পেয়েছি;
তুমি তো কিছুই পাওনি।।
আমায় রাখিতে চাও গো, বাঁধনে আঁটিয়া,
শতবার যাই বাঁধন কাটিয়া।
ভাবি ছেড়ে গেছ, ফিরে চেয়ে দেখি,
এক পা-ও ছেড়ে যাওনি।।