ঋতু গুহ একজন ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী । ইনি বিখ্যাত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহর স্ত্রী ।
Table of Contents
জীবন
১৯৩৭ সালে কলকাতার বালিগঞ্জ প্লেসে ঋতু গুহ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম ছিল নির্মলচন্দ্র গুহঠাকুরতা। তিনি বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষক তথা দক্ষিণী সংগীতবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শুভ গুহঠাকুরতার ভ্রাতুষ্পুত্রী। খুব অল্প বয়সেই তিনি গান গাওয়া শুরু করেন।
১৯৪১ সালে গীতবিতান সংগীতবিদ্যালয় ও পরে ১৯৪৮ সালে দক্ষিণীতে যোগ দেন। ১৯৫৬ সালে তিনি দক্ষিণী থেকেই স্নাতক হন। দক্ষিণীতে তিনি শুভ গুহঠাকুরতা, সুনীল রায় প্রমুখ বিশিষ্ট শিক্ষকদের কাছে গান শেখেন। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তার প্রথম অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়।
১৯৬২ সালে ঋতু গুহ সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহর সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ‘দক্ষিণী’-তে গান শিখতে গিয়ে তাঁদের পরিচয়। সুরের যে বন্ধনে তাঁরা বাঁধা পড়েছিলেন ঋতু গুহ-র প্রয়াণ পর্যন্ত তা অটুট ছিল। তাদের দুই কন্যা বর্তমান। ঋতু গুহের একাধিক অ্যালবাম বেরিয়েছে। তিনি দেশে ও দেশের বাইরেও একাধিক স্থানে গান গেয়েছেন। অসুস্থতার কারণে জীবনের শেষ বছরগুলিতে তিনি সংগীতজগৎ থেকে দূরে ছিলেন।
গান
ঋতু গুহ প্রধানত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হলেও শাস্ত্রীয় সংগীত, টপ্পা ও অতুলপ্রসাদী গানে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ছিল। তার গাওয়া রবীন্দ্রসংগীতগুলির মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়তা পায় ‘এ কী লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, প্রাণেশ হে’ গানটি। রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের গান, বিশেষত ধ্রুপদাঙ্গ ও ভাঙা গান ছিল তার বিশেষত্ব। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, শান্তিদেব ঘোষ, সত্যজিৎ রায় প্রমুখেরা ছিলেন তার গুণমুগ্ধ। বুদ্ধদেব গুহ তাদের সম্পর্কের কথা ধরে রেখেছিলেন তার খেলা যখন উপন্যাসে।
প্রখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক পল কক্সের ‘আইল্যান্ড’ ফিল্মে তাঁর ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই/ চিরদিন কেন পাই না’ গানটি ধরা আছে। আদ্যন্ত ব্যতিক্রমী এই শিল্পী রবীন্দ্রনাথের গান ছাড়াও অতুলপ্রসাদ ও জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গানও গেয়েছেন।
মৃত্যু
তাঁর সময়কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়িকা হওয়া সত্ত্বেও অসুস্থতার জন্য জীবনের শেষদিকে তিনি খুব একটা অনুষ্ঠান করতে পারেননি। ২০১১ সালে ২৪ ডিসেম্বর তিনি প্রয়াত হন।
সংকলিত গান
ঋতু গুহর ১৯৬০-১৯৮০-এর দশকে রেকর্ড-করা গানগুলি সংকলিত হয়েছে।
- বাসন্তী হে ভুবনমোহিনী (১৯৯৮)
- আপন ভিতর হতে (২০০৫)
- ত্রিধারা
আরও দেখুনঃ