কুমার শানু ভারতের একজন উল্লেখযোগ্য বলিউড গায়ক। তিনি এওয়ার্ড পান ফিল্ম ফেয়ার সেরা পুরুষ গায়ক পর পর পাঁচ বছর। তাকে ভারত সরকার ২০০৯ সালে পদ্মশ্রী তে সম্মানিত করে।
প্রথম জীবন
কুমার শানুর বাবা পশুপতি ভট্টাচার্য্য ছিলেন একজন গায়ক ও সুরকার। তার পৈতৃক বাড়ী ও জন্মস্থান ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরের হাসারা গ্রামে।তিনি জীবিকার তাগিদে কলকাতায় চলে যান এবং কুমার সানু কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শানুকে গান ও তবলা শিখান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে ডিগ্রি পাওয়ার পর কুমার শানু ১৯৭৯ সালে প্রকাশ্যে কার্যক্রম করা শুরু করেন, গান গাওয়া শুরু করেন হোটেল ও বিভিন্ন অনুষ্টানে কলকাতায়। কিশোর কুমার এর পরে তিনি বলিউডের গায়কের মডেল হয়েছেন। পরবর্তিতে তিনি নিজের শৈলিতে গান গাওয়া শুরু করেন।তিনি ছিলেন ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেকার সেরা গায়ক।
পেশা
১৯৮৭ সনে, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক জগজিত সিং হিন্দি ছবি আন্ধিয়া তে গান গাওয়ার সুযোগের কথা শানুকে প্রস্তাব করেন। শানু তখন মুম্বাই তে চলে আসেন, যেখানে কল্যাণজী-আনান্দজী তাকে গান গাওয়ার সুযোগ দেন হিন্দি ছবি যাদুকর এ। কল্যাণজী-আনান্দজী তাকে তার নাম কেদারনাথ ভট্টাচার্য’ থেকে কুমার শানু করার প্রস্তাব দেন।
শানু জগজিত সিং এর ছবিতে গান গাওয়া বন্ধ করেন,এবং পরে তিনি চলে যান কাজ করতে সুরকার নওশাদ, রাভিন্দ্র জেইন, হৃদয় নাথ মঙ্গেশকর, পিটি, আর, কে, রাজদান, কল্যাণজী-আনান্দজী ও উষা খান্না এর সাথে।
১৯৯০ এর ছবি আশিকি’ এর জন্য সংগীত পরিচালক নদীম-শ্রবন খুজে পান কুমার শানুকে গান গাওয়ার জন্য। যার মধ্যে আছে “এক সানাম চাহিয়ে”, “তু মেরি জিন্দেগি হে”, “নাজার কে সামনে”, “জানে জিগার জানেমান”, “আব তেরে বিন জিলেংগে হাম” এবং “ধিরে ধিরে সে”। তিনি পর পর পাঁচবার পুরুষ গায়ক হিসেবে ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড জিতে রেকর্ড গড়েছেন। তার পরবর্তী এওয়ার্ড এসেছে হিন্দি ছবি সাজান (১৯৯১), দিওয়ানা (১৯৯২), বাজিগর (১৯৯৩), এবং ১৯৪২: এ লাভ স্টোরি (১৯৯৪) থেকে।
শানু প্রায়ই সহযোগিতা করতেন নদীম-শ্রবন। তাদের কিছু সহযোগিতা মূলক গানের ছবি গুলো হলো আশিকি (১৯৯০), দিল হে কি মানতা নেহি (১৯৯১), সড়ক (১৯৯১), সাজান (১৯৯১), দিওয়ানা (১৯৯২), দিল কা কিয়া কাসুর (১৯৯২), কাল কা আওয়াজ’ (১৯৯২), শ্রীমান আশিকি (১৯৯৩), সলামী (১৯৯৩), দামিনী (১৯৯৩), দিলওয়ালে (১৯৯৪), অগ্নি সাক্ষী (১৯৯৬), রাজা হিন্দুসস্থানী (১৯৯৬), জীত (১৯৯৬), পরদেশ (১৯৯৭), এগুলো ছাড়াও আরো।
দুই দশকের কর্ম জীবন পার করেন তিনি অনেক সংগীত পরিচালকের সাথে, তাদের মধ্যে হচ্ছেন, আর.ডি. বর্মন, আনান্দ-মিলিন্দ, আনু মালিক, যতীন-ললিত, নদীম-শ্রবন, হিমেশ রেশমিয়া, ইসমাইল দরবার, কল্যাণজী-আনান্দজী, লক্ষিকান্ত-পেয়ারেলাল, রাজেশ রোশন, সাজিদ-ওয়াজিদ, ভিজু শাহ, উত্তম সিং এরদুশমন ছবিতে, রাম-লক্ষন, দীলিপ সেন-সমীর সেন, আনন্দ রাজ আনন্দ, আদেশ শ্রীভাস্তাব, বিশাল-শেখর, এম. এম. কেরাভানি এবং ভিশাল ভারাডওয়াজ।
তিনি ভারতীয় ছবির জন্য গানও তৈরি করেছেন এবং বলিউড ছবিও প্রযোজনা করেছেন তা নাম হচ্ছে উত্থান। বর্তমানে কুমার শানু’র দল কাজ করছে রাকেশ ভাটিয়া এর সাথে এবং তারা এক সাথে প্রযোজনা করছেন হিন্দি ছবি যা তৈরি হচ্ছে মুম্বাই এর চার জন পথ শিশুদের নিয়ে। তাদের চার জন’ই রেলওয়ে প্লাটফর্মে জুতা পালিশের কাজ করে প্রতিদিনের রুটি আর মাখনের জন্য। মিঠুন চক্রবর্তী এই ছবিতে প্রধান নায়কের ভুমিকায় অভিনয় করেছেন। সাম্প্রতিক কুমার শানু একটা কাব্যিক বাংলা ছবি হাসন রাজা এর জন্য গান গেয়েছেন, যা পরিচালনা করেছেন যুক্তরাজ্য ভিত্বিক পরিচালক রুহুল আমিন।
শানু প্যানেল বিচারক ছিলেন সনি টিভি এর ওয়ার পরিবার, ঘড়োয়া গায়কদের এক সাথে করার রিয়েলিটি সো যা ছিল জি বাংলা টিভিতে এবং একটি গানের রিয়েলিটি সো যার নাম ছিল সা রে গা মা পা – বিশ্ব সেরা।
এওয়ার্ডস
- ২০০৯: পদ্মশ্রী: ভারত’ তের ৪র্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা যা দেয়া হয়েছে ভারত সরকার এর পক্ষ থেকে।
- ২০১৪: মহনায়ক উত্তম কুমার লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এর পক্ষ থেকে৷
- ২০১৫:সঙ্গীতমেলা লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এর পক্ষ থেকে৷
আরও দেখুনঃ