মিফতাহ্ জামান একজন বাংলাদেশী আধুনিক, নজরুল ও ধ্রুপদী সংগীতশিল্পী ও সুরকার। ২০১০ সালে সারাহ বিল্লাহর সাথে যৌথভাবে তার প্রথম অ্যালবাম শুধু তোমাকে মুক্তি পায়। এই এই অ্যালবামের গান “চির অধরা” এর মাধ্যমে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন করেন। ২০১১ সালে সাজিদ সরকারের সঙ্গীতায়োজনে শিহরণ অ্যালবামে টাইটেল গানে কন্ঠ দেন। এরপর ২০১২ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম দ্বিতীয়া মুক্তি পায়। এই অ্যালবামের “প্রাপ্তি শূণ্য” গানটির জন্য তিনি ২০১৩ সালে আধুনিক গান বিভাগে সিটিসেল চ্যানেল আই মিউজিক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি মিশ্র অ্যালবামে কন্ঠ দিয়েছেন। ২০১৪ সালে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম “আদরের শুকতারা” মুক্তি পায়।
Table of Contents
মিফতাহ্ জামান । বাংলাদেশী আধুনিক, নজরুল ও ধ্রুপদী সংগীতশিল্পী ও সুরকার
প্রথম জীবন
মিফতাহ্ জামান এর জন্ম ও শৈশব কেটেছে বরিশালে। তার পিতা এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, ক্যাডেট কলেজের একজন শিক্ষক ও মা মাজেদা বেগম। ছোটবেলায় রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতের মাধ্যমে তিনি গানের চর্চা শুরু করেন। দীর্ঘদিন বাসুদেব সেনগুপ্ত, চঞ্চল নট্টর কাছে নজরুল ও ধ্রুপদী গানের তালিম নেন।
কৈশোরে বাবার চাকরির সূত্রে বরিশাল থেকে ঝিনাইদহে চলে আসেন এবং সেখানে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে লেখাপড়া করেন। কলেজে পড়ার সময় আন্তঃক্যাডেট কলেজ সংগীত প্রতিযোগিতায় তিনবার সেরা কণ্ঠ শিল্পী হিসেবে পুরস্কার পান। কলেজ জীবন শেষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ও সেখান থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে (বিবিএ) স্নাতক সম্পন্ন করেন।
২০০৮ ও ২০০৯ সালে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ইউথ ফেস্টিভ্যাল-এ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় সহপাঠীদের লেখা গানে প্রথম গানে সুর করেন ও কন্ঠ দেন। সে সময় তার অন্যতম সহপাঠী তুষার হাসানের সাথে পরিচয় হয়, যিনি তার অধিকাংশ গানের গীতিকার।
সঙ্গীতজীবন
২০০৮ সালে মিফতাহ্ জামান ফুয়াদ আল মুকতাদির এর সঙ্গীতায়োজনে সংগীত শিল্পী কনার ফুয়াদ ফিচারিং কনা অ্যালবামের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীতজগতে প্রবেশ করেন। তিনি এই অ্যালবামের গানগুলোতে সুর করেন। এসময় ফুয়াদের অনুরোধে অ্যালবামের “ভ্রান্তি” গানটির বিকল্প ভার্সনে কন্ঠ দেন।
প্রায় দুবছরের বিরতির পরে ২০১০ সালে জি-সিরিজের ব্যানারে মিফতাহ্ জামানের প্রথম অ্যালবাম ‘শুধু তোমাকে’ প্রকাশিত হয় । এ অ্যালবামটিতে তার সাথে সহশিল্পী হিসেবে সারাহ বিল্লাহ কণ্ঠ দিয়েছিলেন। তিনি এ অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন। এ অ্যালবামের চির অধরা গানটি তাকে বিপুল জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি এনে দেয়। এছাড়াও অ্যালবামের শুধু তোমাকে, অবেলায়, অবশেষে প্রভৃতি গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়।

এরপর ২০১১ সালে সাজিদ সরকারের সঙ্গীতায়োজনে মিশ্র অ্যালবাম শিহরণ এর টাইটেল গানটিতে কন্ঠ দিয়েছেন মিফতাহ। এছাড়াও সন্ধি ফিচারিং ‘ভালোবাসি তোমাকে পার্ট-টু’ অ্যালবামে একটি গান গেয়েছেন তিনি।
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জি-সিরিজ অগ্নিবীণার ব্যানারে তার দ্বিতীয় অ্যালবাম দ্বিতীয়া প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় অ্যালবাম হলেও এটি ছিল তার প্রথম একক অ্যালবাম। এ অ্যালবামের ১১ টি গানের মধ্যে ৯ টি গানে তিনি সুর করেন ও ১ টি গানে ইমতিয়াজ খান। অন্যটি রবীন্দ্রসংগীত। এখানে তিনি ধ্রুপদীর সঙ্গে রক সংগীতকে মিলিয়েছেন। এসম্পর্কে মিফতাহ বলেন, ‘গানগুলোতে কথাকে প্রাধান্য দিয়েছি আমি। কথার ওপর নির্ভর করে সুর বসিয়েছি, কখনো আবার সুরই কথাকে ডিকটেট করেছে। সব মিলিয়ে চেষ্টা করেছি অন্যদের মতো নয়, গানগুলো যেন আমার মতো হয়।’ এই অ্যালবামের “প্রাপ্তি শূণ্য” গানটির জন্য তিনি ২০১২ সালের সিটিসেল চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের আধুনিক গান ক্যাটাগরিতে মনোনীত হন।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে লেজার ভিশনের ব্যানারে মিফতাহ জামানের সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আদরের শুকতারা’ মুক্তি পায়। এ অ্যালবামের জন্য তিনি এমটিভি চার্ট অ্যাটাক সিলভার ডিস্ক পুরস্কার লাভ করেন।
মিফতাহ জামানের অধিকাংশ গানের গীতিকার তুষার হাসান।
এর বাইরে ‘বড় ছেলে’ টেলিছবিতে সোমেশ্বর অলির লেখা ‘তাই তোমার খেয়াল’ গানটিসহ গেয়েছেন একই গীতিকারের ‘কতো কিছু বাকি’ নামের গান। এটি ছিলো ‘ফরএভার’ নাটকের গান।
বর্তমানে মিফতাহ্ জামান তার নতুন প্রকল্প, আরএন সিরিজ (রবীন্দ্রনাথ-নজরুল সিরিজ) নিয়ে কাজ করছেন। এ অ্যালবামে তিনি একটু ভিন্ন ভাবে এই দুই কীংবদন্তীর নির্বাচিত গানগুলোকে তুলে ধরবেন।
কর্মজীবন
সঙ্গীতের পাশাপাশি মিফতাহ্ জামান এনরুট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আরও দেখুনঃ