আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে [ Amar Moto Pran Kadilo ]

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে
লালন শাহ্‌

“আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে” গানটি একটি লালনগীতি । লালনগীতি বলতে বাউল লালন শাহ্‌ যেসব গান লিখেগেছেন সেইসব গানকে বোঝায় । লালন ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি যিনি ফকির লালনলালন সাঁইলালন শাহমহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত।

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে [ Amar Moto Pran Kadilo ]

গানের জনরাঃ লালনগীতি

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে [ Amar Moto Pran Kadilo ]

বুঝবি রে গৌরপ্রেমের কালে

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে।
দেখা দিয়ে গৌর ভাবের শহর
আড়ালে লুকালে।।

যেদিনে হতে গৌর হেরেছি
আমাতে কী আমি আছি।
কী যেন কী হয়ে গেছি

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে
লালন শাহ

প্রাণ কাঁদে গৌর বলে।।

তোরা থাক জাত কূল লয়ে
আমি যাই চাঁদ গৌর বলে।
আমার দুঃখ বুঝলিনা রে
এক মরণে না মরিলে।।

চাঁদমুখেতে মধুর হাসি
আমি ঐরূপ ভালোবাসি।
লোকে করে দ্বেষাদ্বেষী
গৌর বলে যাই গো চলে।।

একা গৌর নয় গৌরাঙ্গ
নয়ন বাঁকা শ্যাম ত্রিভঙ্গ।
এমনই তার অঙ্গ গন্ধ
লালন কয় জগত মাতালে।।

লালন শাহঃ

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে
লালন শাহ্‌

আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে গানের গীতিকার লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের  মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো মূলত বাউল গান হলেও বাউল সম্প্রদায় ছাড়াও যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে।

লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার শিষ্যরা তাকে “সাঁই” বলে সম্বোধন করতেন। তিনি প্রতি শীতকালে আখড়ায় একটি ভান্ডারা (মহোৎসব) আয়োজন করতেন। যেখানে সহস্রাধিক শিষ্য ও সম্প্রদায়ের লোক একত্রিত হতেন এবং সেখানে সংগীত ও আলোচনা হত।

১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন।

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment