রাগের সময় উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে রাগ পরিবেশনের জন্য সময় একটি বিশেষ নিয়ামক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়কে দিনের বিচারে এবং ঋতুর বিচারে ভাগ করা হয়েছে।
Table of Contents
রাগের সময়:
প্রহরভিত্তিক রাগ:
ভারতীয় সময় পরিমাপক একক অনুসারে–
২৪ সেকেন্ড= ১ পল
৬০ পল= ১ দণ্ড= ২৪ মিনিট
সাড়ে সাত দণ্ড (৭৷৷৹)=১ প্রহর=১ যাম= ৩ ঘণ্টা
৮ প্রহর= ১ দিন =২৪ ঘণ্টা
ভারতীয় মতে দিবসের একটি অর্থ হলো– যতক্ষণ সূর্যের আলো পৃথিবীকে আলোকিত করে। এই অর্থে দিবস হলো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়। সূর্যোদয়ের মুহূর্তকে বলা হয় ব্রাহ্মমুহূর্ত। এই ব্রাহ্মমুহূর্তকে দিনের শুরু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উল্লেখ্য দিবারাত্রির ৩০ ভাগের এক ভাগ হলো মূহূর্ত। এই বিচারে ৪৮ মিনিটে এক মুহূর্ত হয়। কোনো স্থানে সূর্য দৃশ্যমান হওয়া থেকে পরবর্তী ৪৮ মিনিট হলো ব্রাহ্মমুহূর্ত। অন্যভাবে বলা যায়, সূর্যোদয়ের প্রথম ৪৮ মিনিট হলো ব্রাহ্মমুহূর্ত।
ভারতবর্ষ নামক বিশাল ভূখণ্ডের সকল স্থানে একই সময় ব্রাহ্মমুহূর্ত সংঘটিত হয় না। আবার ঋতু পরিবর্তনে কারণে প্রতিদিন একই সময়ে ব্রাহ্মমুহূর্ত হয় না। কিন্তু লক্ষ্য করা যায়, সূর্য যখন বিষুবরেখা অতিক্রম করে, তখ, এই রেখার নিকটবর্তী অঞ্চলে দিবারাত্রি সমান হয়। এই কারণে, সূর্যোদয়ের একটি আদর্শমান হিসেবে বিবেচনা করা হয় ৬.০০। এই সূত্রে দিবা প্রথম প্রহর শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে। ঋতু পরিবর্তনে এই সময়ের হেরফেল হলেও এই মানকেই অনুসরণ করা হয়।

রাজবাড়িতে যামের শেষে ঢাক বা ধাতব ঘণ্টায় আঘাত করে সময়ের ঘোষণা দেওয়া হতো। এই ঘোষণাকে বলা হতো প্রহর ঘোষণা। এই ঘোষণা হতো প্রহরের শেষে। এর অর্থ হলো সকাল ৬টায় যে প্রহর ঘোষণা করা হতো, তাকে বলা হতো রাত্রি শেষ প্রহরের ঘণ্টা। এই কারণে বেলা দ্বিপ্রহর হলো বেলা ১২টার ঘণ্টা। উল্লিখিত এই সময় পরিমাপের বিচারে
দিবা প্রথম প্রহর : ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা [ঘণ্টা পড়বে ৯টায়]
দিবা দ্বিতীয় প্রহর : সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা [ঘণ্টা পড়বে ১২টায়]
দিবা তৃতীয় প্রহর : দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা [ঘণ্টা পড়বে ৩টায়]
দিবা চতুর্থ বা শেষ প্রহর : বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা [ঘণ্টা পড়বে ৬টায়। একে সন্ধ্যার ঘণ্টাও বলে থাকেন]
রাত্রি প্রথম প্রহর : সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা [ঘণ্টা পড়বে ৯টায়]
রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর : রাত ৯টা থেকে রাত ১২টা [ঘণ্টা পড়বে ১২টায়]
রাত্রি তৃতীয় প্রহর : রাত ১২টা রাত ৩টা [ঘণ্টা পড়বে ৩টায়]
রাত্রি চতুর্থ বা শেষ প্রহর : রাত ৩টা থেকে ভোর ৬ট [ঘণ্টা পড়বে ৬টায়, রাত্রি শেষ প্রহরের ঘণ্টা]
বর্তমানে প্রাত্যহিক কাজকর্মে প্রহরের ব্যবহার না থাকলেও ভারতীয় রাগসঙ্গীতে এবং জ্যোতিষশাস্ত্রে ‘প্রহর’ ব্যবহার আছে। অবশ্য ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে প্রহর নির্ধারণে মতভেদ আছে। পশ্চিম ভারতে রাগসঙ্গীতে দিবসের প্রথম প্রহর ধরা হয় ভোর ৪টা থেকে। কিন্তু একে সরসময় মান্য করা যায় না। ভাতখণ্ডেজী তাঁর ‘ক্রমিক পুস্তক মালিকা (দুসরী পুস্তক)’ গ্রন্থে ইমন রাগের লক্ষণগীতিতে এই রাগের গায়নকাল উল্লেখ করেছেন, ‘রাত প্রথম প্রহর’।
এই বিচারে দিবসের প্রথম প্রহর ভোর ৪টা থেকে ধরলে, ইমন গাওয়ার সময় হয় বিকেল ৪টা। কিন্তু রাত্রি প্রথম প্রহরকে সন্ধ্যা ৬টা ধরলে, ঋতু পরিবর্তনের সময়ের হেরফের হলেও তা বিকেল হয় না। প্রাতঃসন্ধি ও সায়ংসন্ধি রাগে সময়ের হেরফের সকল সন্ধ্যার বিচারে মান্য করা যায়। কিন্তু সন্ধি রাগের আগে পরের রাগে প্রহরের শুরু ৪টা ধরলে বিপত্তি ঘটে।
রাগ ও তাদের গায়ন সময়
প্রারম্ভিক সকাল
রাগ কালিঙ্গড়া , রাগ যোগীয়া , রাগ রামকেলী , রাগ ভৈরব , রাগ গুনকলি
ঠাট : ভৈরব – রাগ ভৈরব
অতি প্রাচীন এই রাগটি ভৈরো, ভ্যায়রো, মালব, ভৈরব ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত।প্রাচীন হলেও বর্তমান প্রচলিত ভৈরবের সাথে আগের ভৈরবের কোন মিল নেই। এটি একটি ঠাট রাগ। রে,ধ কোমল- গাওয়ার সময় আন্দোলিত হয় এবং বিশেষ মহত্বপূর্ণ ভাবে ফুটে উঠে। ভৈরবী ঠাটের কোমল গ ও নি এর স্থলে শুদ্ধ গ নি ব্যবহার করলেই ভৈরব ঠাটের স্বর সপ্তক পাওয়া যায়। রাগটি প্রাত:কালীন সন্ধি প্রকাশ রাগ। ধৈবতের আন্দোলন কালে কোমল নি ঈষৎ প্রয়োগ হয় এবং রে স্বরটি অতি কোমল ও অবরোহে বেশি প্রাধান্য পায়। কুশলতার সাথে অবরোহ গতিতে কোমল নি ব্যবহার করা যায়। গমরে, ধমপ, ধমপ ধনিসাঁ এই স্বর সংগতি মীড় যুক্ত হয়ে বেশি প্রয়োগ হয়।
আরোহে সা রে গ ম/ন়ি সা গ ম/সা গ ম এ রকম বিভিন্ন ভাবে স্বর প্রয়োগ হয়ে থাকে। ম রে মীড় হলেও এর সাথে প রে সংযোগ হয়ে একটি বিশেষ রূপ ফুটে উঠে যা সঠিক তালিম প্রাপ্ত গায়ক গণের পক্ষেই কেবল গেয়ে দেখানো সম্ভব। ভৈরবের সমপ্রকৃতির রাগ হচ্ছে কলিংড়া এবং রামকেলী।
পরিচয়: রে ধ কোমল বাকী সব শুদ্ধ স্বর ব্যবহৃত হয়। রে ও ধ এর ব্যবহার শিখে নেয়ার মত একটি বিষয়। ঠাট:ভৈরব। জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ।
আরোহ: সা রে গ ম প ধ নি সাঁ/সা গ ম ধ নি সাঁ। অবরোহ: সাঁ নি ধ প ম গ রে সা ।
চলন: গ ম ধ ধ প গ ম রে রে সা পকড়: সা গ ম প ধ ধ প, ম গ ম রে সা। বাদী: ধ। সমবাদী: রে।
অঙ্গ:উত্তরাঙ্গ । প্রকৃতি: শান্ত, গম্ভীর। ন্যাস স্বর: রে, ম, প ও ধ। সময়:দিবা প্রথম প্রহর (সাধারণত: সকাল ৫-৮ টা)।
সকাল
রাগ বিভাস , রাগ নট ভৈরব , রাগ আহির ভৈরব , রাগ তোড়ি , রাগ গুরজী তোড়ি , রাগ হিন্দোল , রাগ লীলাবতী , রাগ কোমল রিষাভ আশাবরী
বিলম্বিত সকাল
রাগ দেব গান্ধার , রাগ দেশকার , রাগ আলাহিয়া বিলাবল , রাগ আশাবরী , রাগ জৌনপুরী , রাগ দেশী , রাগ ভৈরবী , রাগ বিলাসখনি টোডি , রাগ ভুপাল টোডি , রাগ ললিত
ঠাট : বিলাবল – রাগ বিলাবল
রাগ বিলাবল, বিলাবল ঠাটের অর্ন্তগত একটি রাগ।এই রাগের বৈশিষ্ট্য এবং রুপ ঠাটের সঙ্গে বেশি মিল সম্পন্ন বলে রাগটি বিলাবলের ঠাট রাগ হিসেবে পরিচিত্। কথিত আছে হযরত বেলাল (র:) একটি বিশেষ সুরে আযান দিতেন এবং তার সেই সুরের প্রতিফলনকে ভিত্তি করেই বিলাবল রাগের সৃষ্টি ও নাম করন । এ রাগে সব শুদ্ধ স্বর ব্যবহৃত হয়। নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হল:-
পরিচয়: সব স্বর শুদ্ধ ব্যবহৃত হয় এবং এর চলন বক্রগতি সম্পন্ন।এ রাগের সাথে কল্যাণ ঠাটের প্রচুর সাদৃশ্য থাকায় কখনো কখনো একে প্রাত:কালের কল্যাণও বলা হয়।এই রাগের আরোহে যখন মধ্যম বর্জিত হয় এবং অবরোহে অল্প মাত্রায় কোমল নিষাদ প্রযুক্ত হয়,তখন তাকে আলহিয়া বিলাবল বলা হয়,এই রাগটিই বেশি প্রচলিত।
ঠাট: বিলাবল। জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ। আরোহী: সা রা গা মা পা ধা না র্সা। অবরোহী: র্সা না ধা পা মা গা রা সা। চলন: স, গা, রা, সা, ন্ ধ্, ন্ ধ্ পা, প্ ধ্ ন্ ধ্ ন্ সা, গ র গম গ প, মগ, মর স। পকড়: স গর গ,মগ প,মধপমপ, মগ,মর,স। বাদী স্বর: ধা। সমবাদী স্বর: গা। অঙ্গ: উত্তরাঙ্গ। সময়: প্রাত:কাল।
বিলম্বিত দুপুর
রাগ ভীমপলশ্রী
গোধূলী
রাগ মারওয়া , রাগ শ্রী , রাগ পূর্বী , রাগ বারওয়া , রাগ পটদীপ , রাগ মুলতানী , রাগ মধুবন্তী , রাগ ধানি
সন্ধ্যা
রাগ পুরিয়া , রাগ পুরিয়া কল্যাণ , রাগ পুরিয়া ধনশ্রী , রাগ শুদ্ধ কল্যাণ , রাগ ইমন , রাগ হামীর , রাগ হংসধ্বনি , রাগ পিলু , রাগ শ্যাম কল্যাণ , রাগ ইমন কল্যাণ , রাগ মেঘ , রাগ গৌরী , রাগ লক্ষ্মী কল্যাণ
ঠাট : কল্যাণ – রাগ ইমন
আলাউদ্দিন খিলজীর সভাসদ কবি ও দার্শনিক হযরত আমির খসরু এই রাগটির শ্রষ্টা। এই রাগে সাধারণত: সা স্বরটি বর্জন করে আরোহ গতিতে ন্ র গ এই ভাবে সরল গতিতে যাওয়া যায়। এছাড়াও মধ্যম সপ্তকের পঞ্চমকে বর্জন করে ক্ষ ধ ন, ক্ষ ধ র্স ন র্র র্স, ন র্র ন ধ ক্ষ গ এই সমস্ত স্বরসঙ্গতি বিশেষ বৈচিত্র আনয়ন করে।
পরিচয়: মা কড়ি এবং বাকি সব স্বর শুদ্ধ ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ বিলাবলের শুদ্ধ মা এর পরিবর্তে কড়ি মা এর আগমন।এর চলন বক্রগতি সম্পন্ন।এ রাগের সাথে বিলাবল ঠাটের প্রচুর সাদৃশ্য আছে।
এই রাগের সমপ্রকৃতির ইমন কল্যাণ নামে আরো একটি রাগ আছে যেখানে শুদ্ধ মধ্যম প্রয়োগ করা হয় এবং ইমন অপেক্ষা ঋষভ এর প্রাধান্যও এতে বেশি থাকে। তবে শুদ্ধ মধ্যম এর ব্যবহার গুরুর নিকট শিখেই প্রয়োগ করা উচিৎ, অন্যান্য স্বরের ব্যবহার ইমন এর মতই। সৌন্দর্য বা বৈচিত্র আনয়ন কল্পে প স্বরটিকে এড়িয়ে ব্যবহার করা হলেও মনে রাখতে হবে পা স্বরটি ইমন রাগে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি ন্যস স্বর।
ঠাট: কল্যাণ। জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ। আরোহী: ( ন্ )সা রা গা ক্ষা পা ধা না র্সা। অবরোহী: র্সা না ধা পা ক্ষা গা রা সা। চলন: ন্ র গ র ,গ ক্ষ ধ ন, র্স ন ধ প ক্ষ গ, প র গ র ন র স। পকড়: ন্ র গ র ন্ র সা, বা ন্ র গ র স , প ক্ষ গ র স। বাদী স্বর: গ। সমবাদী স্বর: ন। অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ। প্রকৃতি: শান্ত। সময়: সন্ধিপ্রকাশ রাগ (গোধুলীলগ্ন থেকে রাত ০৯ টা)।
দুপুর
রাগ গৌড় সারং , রাগ বৃন্দাবনী সারং , রাগ শুদ্ধ সারং
বিলম্বিত দুপুর
রাগ ভীমপলশ্রী
গোধূলী
রাগ মারওয়া , রাগ শ্রী , রাগ পূর্বী , রাগ বারওয়া , রাগ পটদীপ , রাগ মুলতানী , রাগ মধুবন্তী , রাগ ধানি
সন্ধ্যা
রাগ পুরিয়া , রাগ পুরিয়া কল্যাণ , রাগ পুরিয়া ধনশ্রী , রাগ শুদ্ধ কল্যাণ , রাগ ইমন , রাগ হামীর , রাগ হংসধ্বনি , রাগ পিলু , রাগ শ্যাম কল্যাণ , রাগ ইমন কল্যাণ , রাগ মেঘ , রাগ গৌরী , রাগ লক্ষ্মী কল্যাণ
ঠাট : কল্যাণ – রাগ ইমন
আলাউদ্দিন খিলজীর সভাসদ কবি ও দার্শনিক হযরত আমির খসরু এই রাগটির শ্রষ্টা। এই রাগে সাধারণত: সা স্বরটি বর্জন করে আরোহ গতিতে ন্ র গ এই ভাবে সরল গতিতে যাওয়া যায়। এছাড়াও মধ্যম সপ্তকের পঞ্চমকে বর্জন করে ক্ষ ধ ন, ক্ষ ধ র্স ন র্র র্স, ন র্র ন ধ ক্ষ গ এই সমস্ত স্বরসঙ্গতি বিশেষ বৈচিত্র আনয়ন করে।
পরিচয়: মা কড়ি এবং বাকি সব স্বর শুদ্ধ ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ বিলাবলের শুদ্ধ মা এর পরিবর্তে কড়ি মা এর আগমন।এর চলন বক্রগতি সম্পন্ন।এ রাগের সাথে বিলাবল ঠাটের প্রচুর সাদৃশ্য আছে। এই রাগের সমপ্রকৃতির ইমন কল্যাণ নামে আরো একটি রাগ আছে যেখানে শুদ্ধ মধ্যম প্রয়োগ করা হয় এবং ইমন অপেক্ষা ঋষভ এর প্রাধান্যও এতে বেশি থাকে। তবে শুদ্ধ মধ্যম এর ব্যবহার গুরুর নিকট শিখেই প্রয়োগ করা উচিৎ, অন্যান্য স্বরের ব্যবহার ইমন এর মতই। সৌন্দর্য বা বৈচিত্র আনয়ন কল্পে প স্বরটিকে এড়িয়ে ব্যবহার করা হলেও মনে রাখতে হবে পা স্বরটি ইমন রাগে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি ন্যস স্বর।
ঠাট: কল্যাণ। জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ। আরোহী: ( ন্ )সা রা গা ক্ষা পা ধা না র্সা। অবরোহী: র্সা না ধা পা ক্ষা গা রা সা। চলন: ন্ র গ র ,গ ক্ষ ধ ন, র্স ন ধ প ক্ষ গ, প র গ র ন র স। পকড়: ন্ র গ র ন্ র সা, বা ন্ র গ র স , প ক্ষ গ র স। বাদী স্বর: গ। সমবাদী স্বর: ন। অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ। প্রকৃতি: শান্ত। সময়: সন্ধিপ্রকাশ রাগ (গোধুলীলগ্ন থেকে রাত ০৯ টা)।
রাগ শ্রী-কল্যান
শ্রী ও কল্যাণ —এই দুই পৃথক রাগের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে শ্রী-কল্যাণ। মিশ্ররাগের নিয়ম অনুযায়ী শেষে যে রাগের নাম থাকে, রাগে তারই প্রাধান্য হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কল্যাণের প্রাধান্যই বেশি। কল্যাণ ঠাটের রাগ কল্যাণ। স্বরের বিচারে ইমনের খুব কাছাকাছি। ইমনে নিরেগ, কল্যাণে সারেগ —এই অঙ্গ ব্যবহার করা হয়। সন্ধের প্রসন্নতা এই রাগে স্পষ্ট।
অন্যদিকে শ্রী রাগ বিকেল শেষ হয়ে সন্ধেয় প্রবেশের সময়কার রাগ। গোধূলির বিষণ্ণতা এই রাগে প্রকট। শ্রী শুনলে শূন্যতার অনুভূতি জাগে। এরই সঙ্গে যোগ হচ্ছে কল্যাণের প্রসন্নতা। এই দুইয়ে মিলে অপরূপ মাধুর্য শ্রীকল্যাণ রাগের মধ্যে। একই সঙ্গে দুরকম স্রোতের খেলা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কণ্ঠ ও যন্ত্র, দুই মাধ্যমেই এই রাগ শুনতে পাওয়া যায়. তবে কণ্ঠে শুনতেই বেশি ভালো লাগে।
বিলম্বিত সন্ধ্যা
রাগ বসন্ত , রাগ মিয়াঁ মালহার , রাগ তিলক কামোদ , রাগ কালী , রাগ হেমকল্যাণ , রাগ নট বিহাগ , রাগ ভূপালী , রাগ কেদার , রাগ কামোদ , রাগ ছায়ানট , রাগ খাম্বাজ , রাগ দেশ , রাগ জয়জয়ন্তী , রাগ রাগেশ্রী , রাগ যোগ , রাগ গৌড় মালহার , রাগ কাফি , রাগ রামদাসী মাল্ল্হার , রাগ বাহার , রাগ গড়া , রাগ সুরদাসী মাল্ল্হার , রাগ নন্দ , রাগ ঝিঁঝোটি , রাগ তিলং , রাগ গোরখ কল্যাণ , রাগ স্রোত , রাগ চাঁদনী কেদার , রাগ কলাবতী , রাগ গাবতী
ঠাট কাফী – রাগ কাফী
বেশকিছু জনপ্রিয় রাগের জন্মদাতা এই কাফি ঠাট। কর্ণাটকী সঙ্গীতে এই রাগটির নাম খরহর প্রিয়া। কাফি রাগটি ঠাটের সাথে বেশি মিল সম্পন্ন বলে এটি ঠাট রাগ হিসেবে পরিচিত। ধ্রুপদ, ঠুমরি, ভজন ইত্যাদি এই রাগে বেশি শোনা যায়।
পরিচয়: গা নি কোমল এবং বাকী স্বর শুদ্ধ ব্যবহার হয়।আরোহে তীব্র গান্ধার ও নি সুকৌশলে বার বার ব্যবহৃত হয়।নিপুন গায়ক রাগ হানি না করেও কোমল ধৈবত ব্যবহার করে থাকেন। তবে মনে রাখতে হবে এই স্বর গুলি রাগের নিয়মিত স্বর নয়।
ঠাট: কাফি। জাতি: সম্পূণ-সম্পূর্ণ। আরোহী: স র জ্ঞ ম প ধ ণ র্স । অবরোহী: র্স ণ ধ প ম জ্ঞ র স। বাদী স্বর: পন্চম (প)। সমবাদী: ষড়জ (স)।(কোন কোন গুনিজন গ এবং নি কে বাদী- সমবাদী মনে করেন)। চলন: ণৃসমজ্ঞরস, সররজ্ঞ, রপ,মপ,ধপ, মপধমপ, জ্ঞ.. , র, স , সস রর জ্ঞজ্ঞ মম প ধমপ জ্ঞ.. র, স। পকড়: সস রর জ্ঞজ্ঞ মম প। অঙ্গ: উত্তরাংগ। সময়: মধ্যরাত্রি (তবে কেউ কেউ মনে করেন সন্ধাবেলাও রাগটি গাওয়া যেতে পারে)।
ঠাট : ভৈরবী
রাগ ভৈরবী
এই রাগ ভৈরবী ঠাটের আশ্রয় রাগ বা তার উৎস ,ঠাট রাগ । রাগ ভৈরবী সংকীর্ণ শ্রেণীর ও সরলব্রক্রগতির নাতিচঞ্চলশান্ত প্রকৃতির ভক্তি ও শিঙ্গার রসাত্মক , দ্রুপধ ও ঠুমরী অঙ্গে প্রচলিত। ঠুমরী বা যে কোন হালকা অঙ্গের গানে ঠাটের ১২টি সুরই ব্যবহার করা হয় । ঠাটঃ ভৈরবী। জাতিঃ সম্পূর্ণ। আরোহী: স ঋ জ্ঞ ম প ধ ণ র্স । অবরোহী: র্স ণ ধ প ম জ্ঞ ঋ স। বাদী স্বর: মধ্যম (ম) মতান্তরে ধৈবত (ধ)। সমবাদী: ষড়জ (স) মতান্তরে গান্ধার (গ)।
আরও দেখুন: