রাগ অরুণ মল্লার বা অরুণ মালহার হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে খাম্বাজ ঠাটের অন্তর্গত একটি অপ্রচলিত কিন্তু অত্যন্ত অনুপ্রাণিত রাগ। এটি সাধারণ শিল্পীদের মধ্যে কম পরিচিত, তবে শাস্ত্রীয় ভক্তদের মধ্যে রূপ, আবেগ ও সুরের গভীরতার জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত। রাগটির ছন্দ ও নান্দনিকতা বিশেষ করে হেমন্তকাল বা বর্ষাকালীন সঙ্গীতানুষ্ঠানে শ্রোতাদের মনোমুগ্ধকর প্রভাব ফেলে।
রাগ অরুণ মল্লার বা অরুণ মালহার
রাগের বৈশিষ্ট্য
রাগ অরুণ মল্লারকে সংক্ষেপে নিম্নরূপে বর্ণনা করা যায়:
আরোহণ (Arohaṇ) : স র গ র গ ম প ন ধ ন র্স
অবরোহণ (Avarohaṇ) : র্স ণ ধ প ম প ধ ম গ র স
ঠাট (Thaat) : খাম্বাজ
জাতি (Jaati) : সম্পূর্ণ
বাদীস্বর (Vadi Swar) : ম
সমবাদী স্বর (Samvadi Swar) : স
অঙ্গ (Anga) : উত্তরাঙ্গ
সময় (Samay) : রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর
রাগটি শ্রোতার মধ্যে বিশেষ রাত্রিকালীন আবেগ জাগ্রত করে। এটি মূলত নরম, মৃদু এবং হৃদয়স্পর্শী সুরের জন্য পরিচিত। উত্তরাঙ্গের আধিক্য রাগটির সুরের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্যকে আরও গভীর করে।
রাগ অরুণ মল্লারের ব্যবহার
হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে অরুণ মল্লার রাগটি প্রধানত এককালীন প্রদর্শন বা নাট্যসংগীতে ব্যবহৃত হয়। এর সুরের বিশিষ্টতা, বাদী ও সমবাদী স্বরের ভারসাম্য এবং খাম্বাজ ঠাটের মাধুর্য রাগটিকে নান্দনিক ও আধ্যাত্মিক উভয়ভাবে অনন্য করে তোলে।
রাগটির বাদ্যযন্ত্রে প্রয়োগ সাধারণত সঙ্গীতানুষ্ঠান বা রিয়াজের সময় করা হয়। মৃদু সুরের ভারসাম্য, নির্দিষ্ট প্রহরের ব্যবহার এবং উত্তরাঙ্গের আধিক্য রাগটিকে বিশেষ করে শ্রোতার মনের আবেগকে জাগ্রত করে।
অরুণ মল্লার বা অরুণ মালহার রাগটি হিন্দুস্থানী সঙ্গীতের সেই অপ্রচলিত রত্নগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত, যা শাস্ত্রীয় শ্রোতাদের মধ্যে বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র। এর খাম্বাজ ঠাটভিত্তিক কাঠামো, পূর্ণজাতি, এবং রাত্রিকালীন সময়ের জন্য উপযুক্ততা এটিকে অন্য রাগের সঙ্গে তুলনায় ভিন্ন ও অনন্য করে তোলে।