রাগ ভূপাল টোড়ি উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভৈরবী ঠাটের অন্তর্গত একটি অত্যন্ত মাধুর্যপূর্ণ ও মেলানকোলিক রাগ। যদিও নামের শেষে “টোড়ি” যুক্ত রয়েছে, এটি মূল টোড়ি শ্রেণির মত কড়ি মধ্যম ব্যবহার করে না। ফলে এটি বিলাসখানি টোড়ি রাগের সাথেও একটি অনুরূপ বৈশিষ্ট্য বহন করে।
এই রাগটির সৌন্দর্য তার সীমিত স্বরসংখ্যার মধ্যেই নিহিত। এখানে মধ্যম ও নিষাদ স্বর বর্জন করা হয়েছে, যার ফলে এর চরিত্র অনেকটা প্রাচীন এবং আধ্যাত্মিক ধাঁচের হয়ে ওঠে।
রাগ ভূপাল টোড়ি
রাগ ভূপাল টোড়ির সংগীত কাঠামো
ঠাট: ভৈরবী
জাতি: ঔড়ব-ঔড়ব (আরোহণ ও অবরোহণ উভয়ই পাঁচ স্বরের)
আরোহণ: স ঋ জ্ঞ প দ র্স
অবরোহণ: র্স দ প গ ঋ স
বাদী স্বর: কোমল ধৈবত
সমবাদী স্বর: কোমল গান্ধার
অঙ্গ: উত্তরাঙ্গ
সময়: প্রাতঃকাল (ভোরবেলার রাগ হিসেবে ধ্যানযোগ্য)
পকড়: দপ, জ্ঞপ, দপ, জ্ঞর, জ্ঞঋস
এই রাগে ঋষভ ও ধৈবত স্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং সেগুলি কোমল রূপে ব্যবহৃত হয়। গান্ধার স্বরটি সাধারণত সামান্য রেশ তুলে মধ্যমহীনভাবে প্রয়োগ করা হয়, যা রাগটিকে ‘টোড়ি’ ঘরানার রাগদের সাথে মিল রাখে, কিন্তু স্বতন্ত্রতাও বজায় রাখে।

রাগটির ব্যঞ্জনা ও রস
রাগ ভূপাল টোড়ির প্রধান রস হলো করুণা ও ভক্তি। এটি ধ্যান, প্রার্থনা এবং মানসিক স্থিরতার জন্য আদর্শ একটি রাগ। সকালবেলায় পরিবেশিত হলে, এটি হৃদয়কে প্রশান্ত করে এবং আত্মোপলব্ধির এক বিশেষ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
তথ্যসূত্র
শক্তিপদ ভট্টাচার্য, উচ্চাঙ্গ ক্রিয়াত্মক সঙ্গীত, প্রকাশিত ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৭।