শামসুদ্দিন হীরা । বাংলাদেশী গীতিকার ও সুরকার

শামসুদ্দীন হীরা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৩ সালে, বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলায়। তাঁর পিতা ছিলেন এক সংগীতানুরাগী ও সংস্কৃতিবান মানুষ, যিনি পরিবারিক পরিবেশেই গান-বাজনার চর্চা করতেন এবং নিজেও নিয়মিত গান গাইতেন। এই অনুপ্রেরণামূলক পরিবেশেই হীরার সংগীতের প্রতি ভালোবাসার বীজ রোপিত হয়।

ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি তার গভীর অনুরাগ ছিল। গানের প্রতি এই আবেগ ও ভালোবাসা পরবর্তীতে তাঁকে নিয়ে আসে পেশাদার সংগীতচর্চার জগতে।

 

শামসুদ্দিন হীরা । বাংলাদেশী গীতিকার ও সুরকার

কর্মজীবন ও সৃষ্টিশীলতা

সংগীতশিল্পী হিসেবে ১৯৭৩ সালে হীরা নিজ গানে নিজেই কণ্ঠ দেওয়া শুরু করেন। তবে খুব শিগগিরই তিনি অনুধাবন করেন যে, গীতিকারের ভূমিকাই তাঁর প্রকৃত শক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশস্থল। ছন্দ, ভাবনা ও ভাষার সংমিশ্রণে এক অনন্য রচনাশৈলী গড়ে তোলেন তিনি।

১৯৭৪ সালে তিনি যেসব গান রচনা করেন, তার মধ্যে ১০টি গান গেয়েছিলেন সে সময়কার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নীনা হামিদ। ১৯৭৫ সালে যখন সেই গানগুলো অ্যালবাম আকারে প্রকাশিত হয়, তখন সবকটি গানই শ্রোতামহলে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এখান থেকেই শুরু হয় গীতিকার শামসুদ্দীন হীরার সাংগঠনিক ও সাংস্কৃতিক উত্থান।

তিনি এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি গান লিখেছেন। তাঁর গানগুলো আধুনিক, আধ্যাত্মিক, ভক্তিমূলক, লোকজ, চলচ্চিত্রভিত্তিক, নাট্যসংগীত, এমনকি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলেও ব্যবহৃত হয়েছে।

বিখ্যাত গানসমূহ

  • “তোর পিরিতে ঘুণ ধরাইলো” – নীনা হামিদের কণ্ঠে

  • “আমি চাই না কারো মনে আঘাত দিতে” – এন্ড্রু কিশোর

  • “জীবনপুরের জীবন গাঙ্গে জীবন তরী বাইয়া” – সৈয়দ আবদুল হাদী

  • “মন মন মন চায় নীল নীল জ্যোৎস্নায়” (মিলন হবে কত দিনে) – এন্ড্রু কিশোর

  • “নাই নাই নাইরে মরণ ছাড়া গতি নাই” (রাজধানীর রাজা)

 

সহকর্মী শিল্পীরা

তাঁর লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলা সংগীতজগতের বহু প্রখ্যাত শিল্পী, যেমন:

  • সৈয়দ আবদুল হাদী

  • এন্ড্রু কিশোর

  • আশরাফ উদাস

  • দিল আফরোজা রেবা

  • রবি চৌধুরী

  • ডলি সায়ন্তনী

  • কাঙালীনি সুফিয়া

  • বেবি নাজনীন

 

YaifwwriN4BzRFCyqbslL4 শামসুদ্দিন হীরা । বাংলাদেশী গীতিকার ও সুরকার
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

শামসুদ্দীন হীরা একজন সংস্কৃতিমনা, অন্তর্মুখী এবং গানপ্রেমী মানুষ। তাঁর মতে, একটি গান মানেই শুধু সুর নয়, প্রতিটি শব্দে লুকিয়ে থাকে জীবনের গল্প, ভালোবাসা, বেদনা ও প্রত্যাশা। গানের প্রতিটি কথাই তাঁর কাছে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি করে। এই আবেগই তাঁকে পরিণত করেছে একজন বহুমুখী গীতিকারে।

Leave a Comment